উবুন্টুর লাইভ সিডি চালিয়ে বা উবুন্টু ইন্সটল করে আপনি টের পেলেন আপনিতো ডেস্কটপের কিছুই বুঝছেননা! উইন্ডোজে যেখানে নীচে একটা টাস্কবার থাকে সেখানে উবুন্টুতে উপরে একটা টাস্কবার। তার উপর টাস্কবারে কোন স্টার্ট বাটন নেই! কোত্থেকে শুরু করবেন কোন কূল কিনারা পাচ্ছেননা, পুরোটাই অচেনা লাগছে, তাই না! চলুন তাহলে অচেনা ভাবটা কাটিয়ে উবুন্টুর ডেস্কটপের সাথে পরিচিত হয়ে দোস্তি করে ফেলি।
Category: টিউটোরিয়াল
টিউটোরিয়াল ক্যাটাগরির সকল পোস্টের আর্কাইভ
উবি দিয়ে উবুন্টু ইন্সটল পদ্ধতি
অনেকেই উবুন্টু ইন্সটল করতে খুব ভয় পায়। কারন বেশির ভাগ লোকজনই ফরম্যাটের ঝামেলায় যেতে চায়না। তাদের জন্য একদম সহজভাবে উবুন্টু ইন্সটল একটা চমৎকার পদ্ধতি হল উবি (Wubi) ব্যবহার করা। উবি দিয়ে যে কেউ কোন ঝামেলা ছাড়াই উইন্ডোজ পিসিতে উইন্ডোজের যেকোন সফটওয়্যার ইন্সটল করার মত করেই উবুন্টু ইন্সটল করতে পারবে। এজন্য বাড়তি কোন সফটওয়্যার বা অন্য কিছুরও দরকার নেই। নতুন ব্যবহারকারীরা উবুন্টু ইন্সটল করতে গিয়ে পার্টিশন নিয়ে না জানার কারণে প্রায়ই গন্ডগোল করে ফেলে, যার ফলে পার্টিশন মুছে যেতে পারে। উবি দিয়ে ইন্সটল করা হলে আপনার পার্টিশানগুলো হেরফের হবার কোন আশংকাই নেই। তাহলে আসুন দেখি কিভাবে উবি দিয়ে উবুন্টু ইন্সটল করতে হয়।
লাইভ সিডি’র জাদু
উবুন্টুর খুব দারুণ একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে এদেরকে লাইভ সিডি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। নিশ্চয়ই ভাবছেন যে “লাইভ সিডি” আবার কি জিনিস? নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে এটা হচ্ছে “জীবন্ত সিডি”। সাধারণত যেকোন অপারেটিং সিস্টেম (যেমন উইন্ডোজ) কম্পিউটারে ইন্সটল না করে ব্যবহার করে দেখার কোন উপায় নেই। অর্থাৎ আপনি যদি দেখতে চান যে উইন্ডোজ ভিস্তা বা উইন্ডোজ ৭ দেখতে কেমন, তবে সেটা দেখার একমাত্র উপায় হল সেটাকে কম্পিউটারে ইন্সটল করা। কিন্তু লিনাক্স-নির্ভর অপারেটিং সিস্টেমগুলো এর ব্যতিক্রম। আপনি ইচ্ছা করলে আপনার হার্ডডিস্কে ইন্সটল না করেই সিডি থেকে বা ইউএসবি স্টিক থেকে এদেরকে চালাতে পারেন। অর্থাৎ ইন্সটল না করেই দেখে নিতে পারবেন যে অপারেটিং সিস্টেমটি কেমন। শুধু দেখাই না বরং একটা পরিপূর্ণ অপারেটিং সিস্টেমের মত একে ব্যবহারও করতে পারবেন। লেখালেখি, ইন্টারনেট ব্রাউজ, অডিও-ভিডিও চালানো ইত্যাদি সব কাজই করতে পারবেন সিডি থেকে। আর যেহেতু লাইভ মোডে ব্যবহার করতে ইন্সটলেশান করার কোনো দরকার পড়েনা তাই আপনার কম্পিউটারের হার্ডডিস্কের পার্টিশনও অটুট থাকবে, কোনো ধরণের ড্যাটা হারাবার ভয় থাকেনা। অর্থাৎ ইন্সটলেশান ছাড়াই পুরো সিডিটাকে “জীবন্তভাবে” ব্যবহার করতে পারবেন। এজন্যই এর নাম “লাইভ সিডি”।
উবুন্টুর বুটেবল ইউএসবি তৈরি করুন
আপনি উবুন্টুর যে আইসো (.iso) ফাইলটি নামিয়েছেন, ইচ্ছে করলে সেটিকে সিডি/ডিভিডিতে রাইট না করে শুধুমাত্র ইউএসবি স্টিকে (পেন ড্রাইভ) বিশেষভাবে রাইট করেও উবুন্টু ইন্সটল করা যায়। ইউএসবি থেকে বুট করতে হলে মাদারবোর্ডের বায়োস সেটিং-এ কিছু পরিবর্তন করতে হবে। প্রথমে ইউএসবি ডিভাইস বুট করার অপশনটি চালু করতে হবে। তবে মাদারবোর্ড যদি পুরনো হয় তবে সেটা ইউএসবি স্টিক থেকে বুট সাপোর্ট নাও করতে পারে। এজন্য প্রথমেই জেনে নিন আপনার মাদারবোর্ড ইউএসবি বুট সাপোর্ট করে কিনা। যদি না করে তবে সিডি/ডিভিডি থেকেই উবুন্টু ইন্সটল করুন।
আসুন তাহলে দেখে নিই কীভাবে উইন্ডোজ বা উবুন্টু থেকে আপনার ইউএসবি স্টিককে উবুন্টুর আইসো দিয়ে বুটেবল করবেন।
- উইন্ডোজ থেকে ইউএসবি বুটেবলঃ
১। ইউএসবি স্টিককে বুটেবল করতে হলে উইন্ডোজে আলাদা সফটওয়্যার দরকার হয়। এক্ষেত্রে ইউনেটবুটিন সবচেয়ে ভালো অপশন। এখান থেকে ডাউনলোড করুন।
২। এটা ইন্সটলের দরকার নেই , .exe ফাইলটি ডাবল ক্লিক করে ইউনেটবুটিন চালান।
৩। নীচের ছবির মত Disk Image অংশে আপনার ISO ইমেজটা দেখিয়ে দেবেন।
৪। Drive এর জায়গায় আপনার ইউএসবি স্টিকটি সিলেক্ট করুন (সাধারণত বাই ডিফল্ট সিলেক্ট করাই থাকে)।
৫। Ok ক্লিক করলেই বুটেবল ইউএসবি স্টিক তৈরি হয়ে যাবে।
- উবুন্টু থেকে ইউএসবি বুটেবল
১। উবুন্টুতে এজন্য আলাদা কোন সফটওয়্যারের দরকার নেই।
২। নিচের ছবির মত ড্যাশে যান এবং Startup লিখুন।
৩। Startup Disk Creator এ ক্লিক করুন।
৪। Source disc image (.iso) or CD অংশে আপনার ডাউনলোড করা উবুন্টুর আইসো ফাইলটা দেখিয়ে দিন।
৫। Disk to use অংশে আপনার ইউএসবি স্টিক (পেন ড্রাইভ) দেখিয়ে দিন।
৬। Make Startup Disk এ ক্লিক করুন। এবার বুটেবল ইউএসবি ড্রাইভ তৈরি হয়ে যাবে।
আপনি যদি আরো বিস্তারিতভাবে পদ্ধতিগুলো জানতে চান কিংবা উপরের পদ্ধতিতে কোনো কিছু বুঝতে সমস্যা হয়, তবে উবুন্টুর সাইটে বিস্তারিত দেখতে পারেন। সাইটের ডানপাশের অংশে “Help with installing Ubuntu” তে বার্ন করার পদ্ধতি নিয়ে ছবিসহ আলোচনা করা হয়েছে। সাইটটিতে আপনি নিচের মত স্ক্রিনশট পাবেন।
সিডিতে উবুন্টুর আইসো (ISO) ফাইল বার্ন করা
আপনি উবুন্টুর সাইট থেকে যেই ফাইলটি নামিয়েছেন সেটি হচ্ছে একটি .iso বা আইসো ফাইল। উবুন্টুকে ইন্সটল করতে হবে এই আইসো ফাইল থেকেই। উইন্ডোজ ইন্সটল করতে যেমন উইন্ডোজের সিডি দরকার হয় তেমনি উবুন্টু ইন্সটল করতে উবুন্টুর সিডি দরকার হয়। সেজন্য আইসো ফাইলটিকে একটা সিডি/ডিভিডিতে রাইট করে নিতে হবে। একটা খালি ডিভিডি/সিডি আপনার পিসির সিডি/ডিভিডি বার্নারে প্রবেশ করিয়ে কেবল মাত্র কপিপেস্ট করলেই আইসো ফাইলগুলো বার্ন হয়না। এজন্য প্রতিটি সিডি/ডিভিডি রাইটিং টুলসেই ইমেজ বার্ন (Image Burn) করার অপশন থাকে, সেটা ব্যবহার করতে হয়। আপনি যদি আইসো ফাইল বার্ন করার কিংবা সিডি/ডিভিডি বার্ন করার সফটওয়্যার গুলোর সাথে পরিচিত না হোন তবে বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমের জন্য নিচের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে উবুন্টুর সিডি/ডিভিডি বার্ন করতে পারেন।
উবুন্টুতে বাংলায় লেখালেখি করা
উবুন্টুতে বাংলায় লেখালেখির জন্য ডিফল্টভাবেই বাংলা কয়েকটি লেয়াউট দেয়া থাকে। এই লেয়াউটগুলো ব্যবহারের জন্য আলাদা কোন কিছু ইন্সটল করতে হয়না, কেবল লেয়াউটগুলো অ্যাক্টিভেট করলেই হয়ে যায়। ডিফল্টভাবে থাকা এসব লেয়াউটের মাঝে জনপ্রিয় দুটি লেয়াউট “প্রভাত” ও “জাতীয়”ও রয়েছে। তো চলুন দেখা যাক কিভাবে বাংলা লেখালেখি শুরু করবেন উবুন্টুতে।
উবুন্টুর সিডি যেভাবে সংগ্রহ করবেন
আপনি উবুন্টুর নাম শুনে শুনে ক্লান্ত-উৎসাহিত-অনুপ্রাণিত-উদ্বেলিত, কিন্তু আপনি জানেননা যে কোথায় সিডি পাবেন। কোন সমস্যা নেই। আসুন দেখি আপনি কিভাবে উবুন্টুর সিডি জোগাড় করতে পারেন। তার আগে কিছু কথা। উবুন্টু’র একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে এটা বিনামূল্যে পাওয়া যায়। এবং এর সিডি আপনি নিজে ব্যবহার করে অন্যকেও দিতে পারবেন, দরকারে একাধিক কপি করে সেগুলো বিতরণ ও করতে পারবেন – এতে কোন আইনি বাধা নেই এবং সম্পূর্ণ বৈধ। এ কাজটা কিন্তু অন্যান্য প্রোপ্রেইটরি অপারেটিং সিস্টেম, যেমন: উইন্ডোজ, ম্যাক ইত্যাদিতে করতে পারবেননা। উইন্ডোজ বা ম্যাকের একাধিক কপি করে বিতরণ করা বা বিক্রি করা আইনের চোখে দন্ডনীয় অপরাধ।
উবুন্টু’র সিডি আপনি বেশ কয়েকভাবে সংগ্রহ করতে পারেন। নীচে সংগ্রহ পদ্ধতিগুলো আলোচনা করা হল।
উবুন্টুর ফাইল স্ট্রাকচারের অ আ ক খ
উইন্ডোজ ব্যবহারকারী যারা উবুন্টুতে আসার পর যে জায়গায় সবচেয়ে বেশি ঘুরপাক খান সেটা হল উবুন্টু বা লিনাক্সের ফাইল সিস্টেম হায়ার্রকি। উইন্ডোজে কোন ফোল্ডার বা ফাইল কোথায় আছে সেটা তারা সহজে বের করতে পারলেও উবুন্টুতে এসে তারা খাবি খেতে থাকেন। কারণ উবুন্টুতে ফাইল হায়ারার্কি মানে কোন ফাইল কোথায় আছে সেটা উইন্ডোজের চেয়ে সামান্য আলাদা। তাই পরিচিত উইন্ডোজের গন্ডি থেকে বের হয়ে উবুন্টুতে (বা অন্য কোন লিনাক্স ডিস্ট্রতে) আসলে তাদের কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেতেই হয়। তবে কিনা উবুন্টুর ফাইল হায়ারার্কি কিন্তু মোটেও কঠিন কিছুনা, শুধু জানতে হবে কোথায় কি আছে। এই লেখাটাতে উবুন্টুর কথা লেখা হয়লেও প্রায় সব লিনাক্স ডিস্ট্র’র জন্য লেখাটা প্রযোজ্য। ডিস্ট্রভেদে একটা-দুটো ফাইল হয়তো আলাদা থাকতে পারে, বাদবাকী সব একই।