কি বোর্ড সমাচার!

কি বোর্ডের অক্ষরগুলো এলোমেলোভাবে সাজানো থাকে কেন? কিবোর্ডে F কি গুলোর কাজই বা কি?

কিবোর্ডে গুঁতোগুঁতি করতে গিয়ে নিশ্চয়ই আপনার মাথায় এই প্রশ্নগুলো কখনও না কখনও এসেছে। তাহলে চলুন প্রশ্নগুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করি।

প্রথম প্রশ্নের ক্ষেত্রে বলতে হয় – অক্ষরগুলো কিন্তু এলোমেলো থাকেনা। বরং একটা নির্দিষ্ট বিন্যাস মেনেই কি বোর্ডের অক্ষরগুলোকে সাজানো হয়েছে। কিন্তু বিন্যাসটি বর্ণানুক্রমিক নয়।

কেন বর্ণানুক্রমিক নয় সেটা নিয়ে মোটামুটি দু’টি মতবাদ রয়েছে।

মতবাদ – ১ :

  • কিবোর্ডের অক্ষরগুলোর বিন্যাসের ধারণাটা এসেছে টাইপরাইটারের কিবোর্ড থেকে।

প্রথমদিকে টাইপরাইটারে কিন্তু ইংলিশ বর্ণমালা অনুসারেই কিবোর্ডের সকল কি বিন্যস্ত থাকতো। ঐভাবে টাইপ করতে সুবিধা হত ঠিকই কিন্তু বিন্যাসটি একটি বড় সমস্যাও ছিল। যেসব অক্ষর খুব ঘন ঘন ব্যবহৃত হত সেগুলো পাশাপাশি থাকত, ফলে দ্রুত টাইপ করতে গেলে কি গুলো জ্যাম হয়ে যেত। নিচে ঘন ঘন ব্যবহৃত হওয়া অক্ষরগুলোর একটি তুলনামূলক চিত্র দেখানো হল।

Continue reading কি বোর্ড সমাচার!

চট্টগ্রাম : একটি শহর, একটি জেলা, একটি বিভাগ

আপনাকে যদি বলা হয় সারা বিশ্বের সেরা স্থানের তালিকায় কোন স্থানটিকে রাখবেন – আপনি কাকে রাখবেন? চিন্তায় পড়ে গেলেন? পৃথিবীর নামী দামী সব শহরের নাম লাইন ধরে মাথায় আসছে? আপনি কাকে রেখে কার নাম বলবেন আমি জানিনা। কিন্তু আমার লিস্টের একদম একনম্বর জায়গায় থাকবে – চট্টগ্রাম!

আগেই বলে নিচ্ছি – আমার এই সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে কিছুটা নয়, বরং বিশাল পক্ষপাত রয়েছে। আমি নিজে কিন্তু “চিটাইংগা” নই। কিন্তু আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা, মেট্রিক পরীক্ষা – সবই চট্টগ্রামকেন্দ্রিক। চট্টগ্রামের ধুলা-বাতাস গায়ে মেখেই বড় হয়েছি। এ কারণে মনের গভীরে চট্টগ্রামের জন্য বি-শা-ল একটা জায়গা বরাদ্দ হয়ে আছে।

আমার কথা বাদ দিন, আমি যদি আপনাকে চট্টগ্রামের কিছু ছবি দেখাই তবে আপনিও হয়তো আমার দলে চলে আসতে পারেন!

চট্টগ্রাম শহরটা দেখতে কেমন? দিনের বেলা এক রূপ আর রাতের বেলা আরেক রূপ।

Continue reading চট্টগ্রাম : একটি শহর, একটি জেলা, একটি বিভাগ

শিবরাম চক্রবর্তী

শিবরাম চক্রবর্তীকে নিয়ে অল্প কথায় লেখা সম্ভব নয়। উনি নিজেই ছিলেন একটি চরিত্র। নিজেকে তিনি শিব্রাম চক্কোত্তি বলতে ভালবাসতেন। যিনি নিজেকে নিয়ে এভাবে মস্করা করতে পারেন তাঁর মতো রসবোধ আর কার আছে? আর যার রসবোধ এত উঁচু মানের তাকে নিয়ে কিছু লেখাই রসিকতার পর্যায়ে পড়ে। রসিকতা তার ওপর নয়, বরং তাকে নিয়ে যিনি লিখছেন (অর্থাৎ আমি) তার ওপর এসে বর্তায়। যাই হোক রসিকতাকে হাত কয়েক রশি দিয়ে বেঁধে রেখে শুরু করি।

বাংলা সাহিত্যে রসাত্মক গল্পের অমর স্রষ্টা হলেন শিবরাম চক্রবর্তী। কিংবা অন্যভাবে বাংলা সাহিত্যের রস ভান্ডারের সেরা রসের নাম শিবরাম বললেও মনে হয় বাড়িয়ে বলা হবে না। আমার মতে বাংলা সাহিত্যের জগতে তিনিই প্রথম নির্মল হাসির টাটকা বাতাস বয়ে এনেছিলেন। ত্রৈলোক্যনাথ অথবা পরশুরামও ছোট-বড় সকলের হৃদয়ে সমানভাবে পৌঁছে যেতে পারেন নি, যেভাবে শিবরাম অবলীলায় পৌঁছে যেতে পেরেছিলেন।

Continue reading শিবরাম চক্রবর্তী

বাংলায় লিখুন বাংলা!

মোবাইলে কিংবা কম্পিউটারে যারা টপাটপ বাংলিশ এ লিখে যাচ্ছে,তাদের কাছে জিনিসটা সুখকর হতে পারে, কিন্তু আমার মত প্রচুর মানুষের কাছে ব্যাপারটা কিন্তু খুবই পীড়াদায়ক! আগে বলে নেই- “বাংলিশ” বলতে আমি “বাংলা ভাষাকে ইংলিশ অক্ষর দিয়ে লেখা” বোঝাচ্ছি! এটার আরেকটা নাম হচ্ছে “টাকলা”। বাংলিশ বা টাকলা কেন পীড়াদায়ক তা বুঝতে নিচের স্ক্রিনশটগুলো “কষ্ট করে” পড়ুন।


অ্যাজকে কাটপদি বেল্লুর ট্রেন স্টেশনে আমার পারশেনাল মুবেইল টা হ্যারেয়ে জায়ী ... আয়ী মুহুরততে কারো শাট্টে যগা যগ কুরার মুট্টো ন্যামব্যার নেয়ী ... থেয়ী শুবায়ইর প্রুট্টে অনরড রয়ীলো যার যার মোবেইল ন্যামবুর টা আমার কিউমেন্ট বক্স ও ইনবক্সে ডেলে কুভ কশি হুবো  Continue reading বাংলায় লিখুন বাংলা!

হাতের মুঠোয় ভেজাল খাবার

১।

ছোট্ট একটা খবর শেয়ার করি। গতবছর দৈনিক ইত্তেফাকে একটা খবর আসে যে, দিনাজপুরে গাছের নীচে থেকে কুড়ানো লিচু খেয়ে ১১ জন শিশু মারা গিয়েছিল। লিচু গাছে থাকা অবস্থায় কীটনাশক বিষ দেয়া হয়েছিল বলেই এই ঘটনাটি ঘটেছিল বলেছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, রীতিমত গবেষণা চালিয়ে নিশ্চিত করেছিল তারা। আপনি হয়তো খবরটি শোনেনই নাই। তাহলে আরও একটু যোগ করি। ঠিক একই কারণে দিনাজপুরেই ২০১৩ সালে মারা যায় ১৩ জন শিশু, আর ২০১২ সালে মারা যায় ১৪ জন শিশু। বলেন দেখি, এটা কী মৃত্যু নাকি খুন?

২।

ছোটবেলায় ট্রান্সলেশন করেছিলেন মনে আছে? ঐ যে ছিল – “দুধ একটি আদর্শ খাবার – Milk is an ideal food”। কিন্তু এই দুধও কিন্তু এখন আদর্শ নেই – সেখানেও ঢুকে গেছে ভেজাল।

একটা টিভি রিপোর্টে দেখলাম – প্রথমে শ্যাম্পুর সাথে খানিকটা ছানা পানি মিশিয়ে তৈরি করা হয় ফেনা। এরপর এতে গুঁড়ো দুধ, সয়াবিন, চিনিসহ আরও কিছু রাসায়নিক যোগ করা হয়। আর এই জিনিসটিই বাজারে বিক্রি করা হয় তরল দুধ হিসেবে। এই দুধ গরম করলে যাতে ফেনা হয় সেজন্য মেশানো হয় আরেক ধরনের কেমিকেল। মেশিনেও ভেজাল ধরা পরে না।

Continue reading হাতের মুঠোয় ভেজাল খাবার

ময়লা যুদ্ধ!

ধরুন আপনি এমন একজন মানুষ যিনি রাস্তায়-পার্কে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলেন। ময়লা বলতে আমি কলার খোসা, চিপ্সের প্যাকেট, বাদামের ঠোঙ্গা, চকলেটের মোড়ক, সিগারেটের প্যাকেট, পানির বোতল থেকে শুরু করে আপনার ময়লা-ছেঁড়া-ফাটা কাপড় সহ সবকিছুই বোঝাচ্ছি।

আপনি একদিন ফুটপাথ দিয়ে হাঁটার সময় অভ্যাসবশত কলা খেয়ে খোসাটা ফুটপাথে ফেলে দিলেন।

সেই খোসায় পিছলে অন্য আরেক লোক ফুটপাথ থেকে রাস্তায় গিয়ে পড়লেন।

রাস্তায় বাসওয়ালারা যেহেতু নিজেদের স্পেসশিপের ড্রাইভার মনে করে সেহেতু তারা রাস্তায় পড়ে থাকা লোকটার উপর দিয়ে বাস উড়িয়ে নেবার চেষ্টা করল। ফলাফলে লোকটি পিষ্ট হয়ে মারা গেলেন।

লোকটা মারা যাওয়ায় লোকটার আত্মীয়-বন্ধুরা মিলে সেই বাস কোম্পানির বাসগুলো ভাংচুর করলো, আগুন ধরালো। একপর্যায়ে বাসের ডিজেলের ট্যাংকে আগুন ধরে প্রচন্ড বিস্ফোরণ ঘটলো। Continue reading ময়লা যুদ্ধ!

(প্রায়) জ্বালানী ছাড়া বিদ্যুৎ – ক্যামনে কী!

গত বছর জ্বালানীবিহীন বিদ্যুৎ নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম। এই বছর প্রায় একই কাহিনী নিয়ে আবার লিখতে হচ্ছে! এবারের কাহিনীটি এসেছে দৈনিক কালের কন্ঠদৈনিক জনকন্ঠ নামে বাংলাদেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রে। খবরটিতে বলা হয় – নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জালাল উদ্দিন দীর্ঘ গবেষণায় সফল হয়ে তৈরি করেছেন খরচ সাশ্রয়ী এক বিদ্যুৎ উৎপাদন যন্ত্র। তাঁর তৈরি অভিনব বিদ্যুৎ উৎপাদনের এই যন্ত্রটিতে ১০ মিনিট জ্বালানী ব্যবহারের পর যন্ত্রটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। জালাল সাহেব সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছেন – খুবই আনন্দের কথা। কিন্তু উনি পদার্থবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠিত সূত্রকে কাঁচকলা দেখিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছেন – এটা মোটেও আনন্দের কথা নয়।

নিজের উদ্ভাবিত বিদ্যুৎ উৎপাদন যন্ত্রের সামনে জালাল উদ্দিন। ছবি : কালের কণ্ঠ

Continue reading (প্রায়) জ্বালানী ছাড়া বিদ্যুৎ – ক্যামনে কী!

জ্বালানী ছাড়া বিদ্যুৎ – ক্যামনে কী!

ইন্টারনেটে একটা লিংক দেখে চোখ আটকে গেল। সেখানে দাবী করা হচ্ছে জ্বালানীবিহীন বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন দিনাজপুরের শাহিদ হোসেন নামের এক তরুণ। এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেল, গ্যাস কিংবা কয়লা ব্যবহার করা হয়। এগুলো ছাড়াও সূর্যের আলো, বাতাসের গতি কিংবা পানির স্রোতের শক্তিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। শাহিদের “জ্বালানি ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদন” দাবী অনুসারে বিদ্যুৎ উৎপাদনে এগুলো কিছুই লাগবেনা। এবং এইখানেই সমস্যা। একজন ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ব্যপারটা মেনে নেয়া আমার জন্য বেশ কষ্টসাধ্য।
Continue reading জ্বালানী ছাড়া বিদ্যুৎ – ক্যামনে কী!