ভাষা বিপর্যয়ঃ রোমানাইজড বাংলা ভাষা

বেশিদিনের কথা নয় – বছর দশেক আগেও বাংলাভাষাভাষীদের কাছে কম্পিউটারে বাংলা বর্ণমালায় বাংলা লেখা ছিল স্বপ্নের মত। সেসময় বাজারে বিজয় নামে বাংলা লেখার একটা সফটওয়্যার পাওয়া যেত, যার বাজারমূল্য ছিল বেশ চড়া, তার উপর এতে আবার ইউনিকোড বাংলা লেখা যেতনা। ফলে বিজয় দিয়ে লেখা বাংলা বর্ণগুলো অন্য কম্পিউটারে পড়ার জন্যও অনেক হ্যাপা করতে হত। মনে হত কম্পিউটারের মত “অভিজাত” জায়গায় বাংলা বর্ণমালার বুঝি কোন স্থান নেই। তাই তখন রোমান অক্ষর (A, B, C, D ইত্যাদি) দিয়েই লোকজন বাংলা উচ্চারণে ইন্টারনেট লেখার চেষ্টা করত। কিন্তু এখন সেই দিন নেই। এরই মধ্যে বাংলার একঝাঁক মেধাবী জেনারেশন বাংলা ভাষার প্রতি গভীর মমত্ববোধের নিদর্শন হিসেবে কম্পিউটারে বাংলা লেখার বেশ কয়েকটি সফটওয়্যার বানিয়ে ফেলে। শুরু হয় অভ্র, প্রভাত, ইউনিজয়, জাতীয় প্রভৃতি কিবোর্ডের পথ চলা। খুবই সহজ এসব কিবোর্ড দারুণভাবে রপ্ত করতে একজন বাংলাভাষীর খুব বেশি হলে সপ্তাহখানেক লাগে। শুধু তাই-ই না, সবার কথা মাথায় রেখে এসব কিবোর্ডের ডেভেলপাররা সফটওয়্যারগুলোকে বিনাপয়সায় ব্যবহারের সুযোগ করে দিলেন। সবার হাতে হাতে চলে এল এসব সফটওয়্যার, শুরু হল ইন্টারনেটে বাংলা বর্ণমালার জোয়ার। বাংলা বর্ণমালা কম্পিউটারের অভিজাত জায়গায় নিজের আসন পাকপোক্ত করে নেয়। ইমেইল, ব্লগ, ফেসবুক, টুইটার – সবখানে বাংলা বর্ণমালা যেন রাজাসনে আসীন হল। ফলশ্রুতিতে ইন্টারনেটে ঢুকলেই নিজের বর্ণমালায় নিজের ভাষার লোকদের দেখি, কথা বলি – কী যে ভালো লাগে তা বলার মত না।

কিন্তু তারপরও বেশ কিছু লোক আছে, যারা এখনো রোমান অক্ষরে বাংলা লিখে চলেছেন। কম্পিউটারে বাংলা বর্ণমালার এই জোয়ারের সময়ও তারা যেন পণ করে রয়েছেন যে তারা সেই রোমানাইজড বাংলাতেই লিখবেন। এখানেই আমার আপত্তি। রোমান হরফে ইংলিশ লিখুক – কোন সমস্যা নেই। কিন্তু বাংলাকে কেন রোমান হরফে লিখতে হবে? বাংলার তো নিজেরই বর্ণমালা আছে! শুধু তাই না – এরা বাংলাকে রোমান হরফে লিখতে গিয়ে বিদঘুটে সব বাংলা লিখে – যেমন নিচের স্ক্রিনশটটি দেখুন জনৈক মাসুদ রানা কী লিখেছেন!

পড়তে পারছেননা তো? উনি যা লিখেছেন তার উচ্চারণ হচ্ছেঃ

চিথি তা পদে গুড মনে হল , মোবাইল কথা বলের চেয় , চিথি লেখা ভাল , তায় আমরা চিথি লেখা সিচব

তাও বুঝতে পারছেননা? তাহলে এই অদ্ভুত লেখার বঙ্গানুবাদটা দেখুন তাহলেঃ

চিঠি টা পড়ে ভালো লাগলো, মোবাইলে কথা বলার চেয়ে , চিঠি লেখা ভালো , তাই আমরা চিঠি লেখা শিখবো

বুঝেন তাহলে অবস্থা! কী লিখতে গিয়ে কী লিখে ফেলল? এদেরকে নিয়েই এবং এদের জন্যই আমার এই পোস্ট। এই পোস্ট দেখে যদি একজনও রোমানাইজড বাংলা ফেলে বাংলা বর্ণমালায় লেখালেখি শুরু করে তবেই সার্থক হবে এই পোস্টখানা। চলুন তাহলে শুরু করি। আরেকটা স্ট্যাটাস দেখিঃ

হোয়াট আ ববি , মেসি আর আসায় আয় ববি সালা গার্ল

কী মানে এর? ঘাবড়াবেননা – উনি আসলে মেসির বডি নিয়ে কথা বলছেনঃ

হোয়াট আ বডি! মেসির আছে এই বডি? শালা গার্ল।

আরেকজন দার্শনিকের জীবন নিয়ে দর্শন দেখেন। এমনভাবে কোড দিয়ে লিখেছেন – জীবনের দর্শন তো পরের ব্যাপার, এই স্ট্যাটাসের দর্শনই বুঝতেই তো হালুয়া টাইট!

উচ্চারণগত অনুবাদঃ জীবন জার মেনি জেনি কুব চম মানুস। র জারা জেনি তার নিজো জায় না তার এন্ড কুথায়। জার কারনায় আজ মায়রা তাহধায়র শুপার হেউমান কমতার অপবায়ভহার করছ্যা।

বঙ্গানুবাদঃ জীবন, যার মানে জানে খুব কম মানুষ। আর যারা জানে তারা নিজেরাও জানে না তার এন্ড কোথায়। যার কারনে আজ মেয়েরা তাদের সুপার হিউম্যান ক্ষমতার অপব্যবহার করছে।

বুঝতে পারছেন দেশের অবস্থা কি? এসব রোমানাইজড বাঙ্গালদের একট গালভরা নাম আছে – “মুরাদ টাকলা”! যারা ভাবছেন এটা আবার কি তাদের জন্য মুরাদ টাকলা’র অফিসিয়াল পেজ থেকে একটা ছোট্ট কোটেশনঃ

প্রশ্ন: মুরাদ টাকলা নামটি কী মুরাদ নামক কোনো ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে? এর উৎপত্তি হল কেমন করে?
উত্তর: না। একদা আমাদের একজন এডমিনের নিকট জনৈক Joyonto Kumer লিখেছিলেন “Murad takla jukti diya bal, falti pic dicos kan! Lakapar kora kata bal, (অনুবাদ: মুরোদ থাকলে যুক্তি দিয়ে বল। ফালতু ছবি দিছস ক্যান? লেখাপড়া করে কথা বল)”। সেই থেকে Murad Takla নামটির উদ্ভব এবং যার বাংলা অর্থ আসলে “মুরোদ থাকলে।” সুতরাং, মুরাদ টাকলা নামটি মুরাদ নামক কোনো ব্যক্তিকে হেয় করে না।

 

যারা ফেসবুক বা টুইটারে হালকা পাতলা যোগাযোগ রাখেন, তারা কোন না কোন সময় এরকম এক-আধটা “টাকলা” নিশ্চয়ই দেখেছেন। তবে এরা কীভাবে কীভাবে যেন আশংকাজনকহারে ছেয়ে যাচ্ছে! চলুন একজন ছ্যাঁকা খাওয়া টাকলার স্ট্যাটাস দেখি আমরাঃ

মুরাদানুবাদঃ কানো তুমে আতো পাসা নি ……… কে দুস সে ল আমার কান তুমে বলা জাও নি ১ বার বল তমে কে দুস সে ল আমার ল।

ছ্যাঁকা খেলে মানুষ কবি হয় শুনেছি, এখন দেখা যাচ্ছে ছ্যাঁকা খেয়ে মানুষ টাকলাও হয়! 😛 যাই হোক রাতের বেলা কুকুরের ডাক নিয়ে উৎকন্ঠিত আরেকজন টাকলার উদ্ধৃতিঃ

মুরাদানুবাদঃ রাত্র বাল্লা আতো কোত্তা ডাকে কান? বুযিনা!!

এবার বাসা হতে বিতাড়িত একজন টাকলা’র স্ট্যাটাসঃ

মুরাদানুবাদঃআমে ও তোহ বের করী দেকী বাশাআ থেকে দারাউ এশী নেআ জাচী

আরেকজন দার্শনিক টাকলার জীবন নিয়ে উদ্ধৃতি পড়ুনঃ

মুরাদনুবাদঃ শারা জাবোন আখা থাখা ওনাকে মঘা। লিফ থা আমের আমোন হোয়া গালো।

এবার একজন মারফতী টাকলাঃ

মুরাদানুবাদঃ আমি বাব্লাম জারা বোবা পিলামনা তারা। শা আকন বাশ করা অন্নার গরা।

বঙ্গানুবাদঃ আমি ভাবলাম যারে ভবে পাইলাম না তারে। সে এখন বাস করে অন্যের ঘরে।

এবং নারীবিদ্বেষী একজন টাকলার নারীদের নিয়ে অনুভূতিঃ

মুরাদানুবাদঃ নারিরা জাতো জাগপিটো হবে ততই নির্যাতিত হবে কারণ যারা সব্বুটের অবিবাবক চিলো তারা আকোন অসব্বতার অবিবাবক হয়ে পদসে তাই!

কনফিউজড হয়ে আছেন? ভাবছেন কী পড়ছেন এইসব? হু হু … কনফিউজড টাকলাদেরকে তো দেখেনইনি। চলুন সৌদিতে কর্মরত এক কনফিউজড টাকলার সাথে আলাপরিচিতার কিছু অংশ পড়িঃ

আরেকজন টাকলার কনফিউজড স্ট্যাটাসঃ

উই আর ৪র্ম ৯জা আনান্না ব্ট ই নিড ডি ট্ক্ট হঔ ক্যান ই গার ইট?

শুধু আপনি-আমি না, লাইভস্কয়ার ও এই স্ট্যাটাসে কনফিউজড! কনফিউজড হয়ে কি মেজাজ খারাপ হয়ে হয়ে গেছে? হবারই কথা। এরকম বাংলা কী সহ্য করা যায়! চলেন আপনাকে সাজুগুজু’র কিছু টিপ্স দিই, যদি এবার মেজাজটা ভালো হয় (সাজুগুজু’র নাম শুনলেই নাকি মেয়েদের কড়া মেজাজ কোমল হয়ে যায়) –

মুরাদানুবাদঃ আমি চকা লেন্স লাগাতা ছি (চকা’র সন্দরজো বারাটা যা লেন্স লাগান হয়)। আকন আবাপারা কিছু জান্তা ছি

 

সাজুগুজু বাদ দিয়ে ধর্মকর্ম করবেন? সেখানেও টাকলা বোঝাইঃ

মুরাদানুবাদঃ ঈদ আর নামাজ পরতা হাতা হাতা মাঠা জাসচি
বঙ্গানুবাদঃ ঈদ এর নামাজ পড়তে হেটে হেটে মাঠে যাচ্ছি

আসেন আমরা এবার রোমান্টিক টাকলাদের সমাজে বিচরণ করিঃ

মুরাদানুবাদঃ ফ্রদ, বারা কাস্তা আচে। তর এক্তা ভান্দুভির সাতা পরাচএ খারায় দা। প্লিজ দা

বঙ্গানুবাদঃ ফ্রেন্ড ,বড় কষ্টে আছি। তোর একটা বান্ধবির সাথে পরিচয় করায় দে। প্লিজ দে

 

এর পরের দুই প্রেমিকের স্ট্যাটাস আপনারাই বঙ্গানুবাদ করে নিন, আমি শুধু মুরাদানুবাদটাই দিচ্ছিঃ

ম্নে পরা ত্মাই আই নিঝুম রাতে বসা আছি ছা খলা জানালাতা ভাজা জসনা তা ভিজতা ছাই এ মন ভালবাশা এম্ন এ দিন রাতে সারাখন এ নিসশাশে ক্রা বিছরন।

খুব নিখুত চেলো ২ম্র বালোবাসার চল। জা আমে বুজে নে। ২ম্কা বিসশাহ কোরা যখন আমে, ২ম্কা নিযা সোপনো দাকতা সুরো করলাম টিক তখন ই ২মি, আমার সপনো গুলো কা বাংগা দিয়াকো, আর আমার জীবনটা কা কোরা দিয়াচো উলোট পালোট। আখন আর আমার মোনা বালোবাসা নাই আকো শুডো সুন্নোতা আর বুকবোরা গিনা???

এবার আসুন আমরা দেখি এক টাঙ্কিবাজটাকলা’র স্ট্যাটাস, যিনি কীনা ‘সুমি’ আপুকে উৎসর্গ করে গান লিখেছেন যাতে আপু তাকে ফোন দেয়!

মুরাদানুবাদঃ সুমে আপু আমে আকটে গান লেক্সে সুদু আপনার জন্নো।গান আর ফার্স্ট ২ লিন।’ওরা মন ভব আর মায়াই পাগল হইআ মাইতো না সোমাই হোলা জাইতা হোবা জাত্থাই আসোল থিকানা’প্লয কল মি।

বঙ্গানুবাদঃ সুমি আপু, আমি একটি গান লিখেছি শুধু আপনার জন্য। গানের ফার্স্ট দুই লাইন: ‘ও রে মন, ভবের মায়ায় পাগল হইয়া মাইতো না, সময় হলে যাইতে হবে যেথায় আসল ঠিকানা।’ প্লিজ কল মি।

গানের কথা যখন এসেই পড়ল, তাহলে নিশ্চয়ই আপনার গান শুনতে প্রাণ আইঢাই করছে? কিন্তু গানের জগতেও টাকলাদের হাত থেকে রেহাই নেই। দেখুন কয়েকজন গানভক্ত টাকলার স্ট্যাটাসঃ

দোনা দান্না পস্পা বরা,, আমাদার আই দামাল ছালারা…………….

আরেকজন শুনাচ্ছেন – “পৌষের কাছাকাছি রোদ মাখা সেই দিনে” গানটিঃ

পুশ আর কাছা-কাছি রড মাকা সাডিন তেরা আর আচবা কি কুকনো খুছি আর লগ্গা মাগা-মাগি সী হাচি তমি আর হাচব্কি কি কুকনো

 

গানের গুষ্ঠী উদ্ধার হচ্ছে দেখে ভাবছেন, যে সবাই গানের এমন বেহাল দশা করে ফেললেও আপনি একাই হাল ধরবেন? কই আছেন আপনি? এখন কি আর রবিঠাকুরের সেইদিন আছে? দিন পাল্টেছেনা! আগে কিছু হলেই “একলা চলোরে” বলে রাস্তায় একা একা বের হয়ে যাওয়া যেত, আর এখন? এখন একলা চলতে গেলেও কিছু টাকলা আপনার সাথে জুটে যাবে –

চলেন আমরা একটু সাহিত্যিক হই। ঈশপের একটা গল্প পড়েছিলেননা? ঐযে – একটুখানি খারাপ কাজ সমস্ত ভালো কাজকে নষ্ট করে দিতে পারে – এটা ছেলেকে বোঝবার জন্য বাবা একঝুড়ি ভালো আমের মাঝে একটি পচা আম রেখে দেয়। এবার সেই গল্পের টাকলা রূপ দেখি –

আক লক আর সালাতি কারাপ সালাদার সালাদার সাতা মিস্ত দাকা লক্তি কয়া ভাল মাঙ্গো নিয়া আসল ও আক্তি কারাপ মাঙ্গো নিয়া আসল সা তার সালাকা দাকিয়া মাঙ্গো গল আলমারি তা রাকা দিল পরদিন সা তার সালা ক সাই মাঙ্গো আন্তা বলা সা আনল কিন্তু কিন্তু লক্তি দাক্ল জ আক্তা অ মাঙ্গো পকা নি কারন মাঙ্গো তা ভাজাল সিল তকন সা দকান্দার দার বলল তদার জন্য আমি আমার সালা ক কিছু সিকিতা অপারি না

আচ্ছা, এবার অন্য পথে হাঁটি। এই পথে আমি কোনটার অনুবাদ দিবনা, মুরাদানুবাদও দিবনা, বঙ্গানুবাদও না। দেয়াটা বেশ রিস্কি হয়ে যায়। টাকলা স্ট্যাটাস পড়ে নিজেরাই বুঝে নিন কেন রিস্কি হয়ে যায়। যাই হোক শুরু করি একটা এসএমএস দিয়ে। বৈশাখে প্রেমিকাকে চুড়ি উপহার দিয়ে প্রেমিক প্রেমিকার কাছ থেকে নিচের ফিরতি এসএমএসটি পায় –

ভয়াবহ ব্যাপার তাইনা! বলতে চাচ্ছে কী আর লিখে ফেললো কী। আসুন আরেকজন টাকলাকে দেখি যিনি প্রেমিকার সাথে কেক কাটার স্মৃতি রোমন্থন করছেনঃ

দেখেন ব্যাপার! এই দিকে আরেক বইপ্রেমিক টাকলা বইমেলায় গিয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছেঃ

হুমমম… চিন্তিত? তাহলে দেখুন নীচের একজন টাকলী তার জামাই নিয়ে টিএসসি ঘুরে এসে তার ফিরিস্তি দিচ্ছে ফেসবুকে –

একই ঘরানার আরেকটিঃ

পড়ে কী বুঝলেন? কী বুঝলেন সেটা আপনিই জানেন, আমি তার কী জানি? 😛 চলুন দেখে আসি এক তালেবানী টাকলার স্ট্যাটাস –

জ্বী! উনি একেবারে গণহারে সবার ‘ফাঁসি’ চাচ্ছেন। তবে দেখে মনে হচ্ছে অন্য কিছু চাইছেন! যাই হোক আমরা আপাতত এইসব হাবিজাবি স্ট্যাটাস থেকে বের হয়ে একটু আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে চোখ বুলাই। চোখ বুলাতে গিয়ে আটকে গেল এক ভারতীয় টাকলার স্ট্যাটাসে!

মুরাদানুবাদঃ ফালানির বিকার পি নে বলে অনেক বাংলা দাশেয়ার বন্ধ ফ বুক আ আমাদার দাশেয়ার নামা অনেক খারাপ চমন্তস করছে।ইন্ডিয়া ক বাংলা দাশেয়ার ১ন সত্র বলছ্য।আসলে সরতি কথা কে আমি আখনো আ নিউস টা দাখে নে। আমি দাসেয়ার বিরে থাকে। আটা ইন্ডির দস দিয়া লাব নি। সিমান্তা রকশি বি.এস.এফ জোয়ানার দস হতে পারে। আটা ও ঠিক জানিনা বি.এস.এফ আর কতটুক দশ আছে। আমি আজ ডিউটি থাকে আসার পর চমন্তস পি। র দাখে বাজে বাজে চমন্তস। র আ রাজাকারার পোলা পিন তোরা কে জনেশ তদার সাধিন দাশেয়ার জরন ইন্ডিয়ার কতটুক অবধান আছা।

বঙ্গানুবাদঃ ফেলানির বিচার পায়নি বলে অনেক বাংলাদেশের বন্ধু ফেসবুকে আমাদের দেশের নামে অনেক খারাপ কমেন্টস করছে। ইন্ডিয়াকে বাংলাদেশের ১ নাম্বার শত্রু বলছে। আসলে সত্যি কথা কি আমি এখনও এই নিউজটা দেখিনি। আমি দেশের বাইরে থাকি। এতে ইন্ডিয়ার দোষ দিয়ে লাভ নাই। সীমান্ত রক্ষী বি.এস.এফ জোয়ানের দোষ হতে পারে। এটাও ঠিক জানিনা বি.এস.এফ এর কতটুকু দোষ আছে। আমি আজ ডিউটি থেকে আসার পর কমেন্টস পাই। আর দেখি বাজে বাজে কমেন্টস। আরে রাজাকারের পোলাপাইন তোরা কি জানিস তোদের স্বাধীন দেশের জন্য ইন্ডিয়ার কতটুকু অবদান আছে?

থাক বাবা! দেশের ভেতরেই থাকি বরং। আমাদের দেশের টাকলারাই ভালো। তারা দেশের বিভিন্ন ইভেন্টে অংশও নেয়। এই যেমন ধরুন ক্লোজআপ ওয়ানে অংশ নেয়া এক টাকলার দ্ব্যর্থ স্ট্যাটাসঃ

তোরা ক্লোজআপ ওয়ান আ জারা জারা জ্যায সেলা সব তোরা বোগ সোনে… কারন তোরা আরফিন,বালাম,হাবিব দার গান কোইলা ব্যাড দেয়া ড্যাশ… তোরা সব ফাজিয়েল… আমারা তোরা ২নদ রাউন্ড থাকা ব্যাড দেয়া দেলি সুধু মাত্র আরফিন রুমি র গান গাইসে বলা…. তোর হিলো ১ নাম্বার ডগ সোনে

ঐ দিকে আরেকজন বিজি মানুষ তার বন্ধুদের জানাচ্ছে যে কেন তিনি ফেসবুকে বেশিক্ষণ বসতে পারবেননাঃ

ফ্রেন্ডস রর আজ আমে নেট আ বসসস্তাআআ পার বু নাআ, বেকযঃ চল কাতাআ বাকে, মার্কেট এ জওা বাকে, গ্রামীন কাস্টমার কেয়ার এ জাতা হবাআ, বাজার এ জও্ব আ বাকে তায় আজ আমে নও্ব বস্তাআ পারে। বাট টুমরো আমে বসসবু ওকে অল ফ্রেন্ডস আই লাইক ইউ। অকে বাই। গালাম্ম। ভাল থাকু।

যাই হোক এই আবজাব লেখা এখানেই শেষে করি। একেবারে পড়ন্ত বেলায় আরেকটি টাকলা স্ট্যাটাস দিলাম, মুরাদানুবাদ বা বঙ্গানুবাদ – দুটোই নিজেরা করে নিন। 🙂

3 thoughts on “ভাষা বিপর্যয়ঃ রোমানাইজড বাংলা ভাষা”

  1. আপনি আলোর পথযাত্রী। আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।

  2. chrom hoic 😀

    রোমানাইজড অক্ষরে বাংলা লেখা (তথা বাংলিশ) সব সময় এড়াতে পারি না, যেমন অনলাইনে বাংলায় লিখলেও মোবাইলে এখনও বাংলিশ লিখে যাই (তাই বলে মুরাদ টাকলা মার্কা পাবো :S )

    আরেকটা কথা জেড এম মেহেদী হাসানের মন্তব্য অনেকটা ইংরেজদের স্প্যামের মতো 😛

Leave a Reply