জাগো

স্বপ্ন তো আমরা কতই দেখেছি এবং দেখেও যাচ্ছি। কিন্তু দেখে যাওয়া স্বপ্নকে কীভাবে বাস্তবতায় রূপ দিতে হয় সেটা ক’জনেরই বা জানা আছে? আমাদের বেশিরভাগেরই দৌড় কেবল ঐ স্বপ্ন দেখা পর্যন্তই। স্বপ্ন দেখে সেটাকে আঁকড়ে ধরে কীভাবে তাকে বাস্তবে গড়ে নিতে হয় সেটা দেখিয়েছেন খিজির হায়াত খান! “জাগো” সিনেমাটিতে তিনি একদল তরুণের গল্প শুনিয়েছেন, যারা দেশের টানে উজ্জীবিত হয়ে অসম্ভব এক অধরা স্বপ্নকে টেনে হিঁচড়ে বাস্তব জগতের মাটিতে নামিয়ে এনেছে।


Continue reading জাগো

রঙ্গবাণী

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গাড়িচালককে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কী পাস? সে বলল, ‘‘আমি তো স্যার ফাইভ পাস।’’ সেও প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি ভালোভাবে চালায়।

নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান

ধর্মমতে মুসলমানদের কোনো অকালমৃত্যু নেই। তারেক (চলচ্চিত্র পরিচালক তারেক মাসুদ) ও মিশুক (সাংবাদিক মিশুক মুনীর) তাদের জন্য নির্ধারিত সময়েই মারা গেছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মজিবুর রহমান ফকির

Continue reading রঙ্গবাণী

আলু তবে আলুই রয়ে গেল …

গুগল ট্রান্সলেট তার ঝুলিতে বাংলা ভাষা যোগ করেছে এটা পুরনো কথা। এটা যে পরীক্ষামূলক অবস্থায় আছে সেটাও পুরনো কথা। আর একমাত্র ‘এক্সাম-পরীক্ষা’ ছাড়া অন্য যে কোন ‘এক্সপেরিমেন্ট-পরীক্ষা’র ক্ষেত্রে যে সব ধরণের দোষ ত্রুটি উপেক্ষা করে সেসব দোষ শোধরাণোতেই সবাই বিশেষ মনোযোগী হয় – সেসবও জানা কথা। তবে এই সব জানা কথাটিই সম্ভবত ‘অজানা’ রয়ে গিয়েছে প্রথম আলো পত্রিকার!

গুগল ট্রান্সলেট বাংলা ভাষা পরীক্ষামূলকভাবে সাপোর্ট করছে – বেশিদিন হয়নি। এটা নিঃসন্দেহে বাংলা ভাষা ভাষীদের জন্য প্রচন্ড আনন্দের খবর। চিন্তা করে দেখুন – বিশ্বের অন্যান্য দেশের ওয়েবসাইট কিংবা ডকুমেন্ট আমরা আমাদের প্রিয় বাংলা ভাষায় পড়তে পারব – ব্যাপারটা চিন্তা করেই তো ভালো লাগছে। বাংলাভাষা পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর ভাষা হিসেবে যতটাই খ্যাত, ব্যাকরণগত দিক থেকে ততটাই জটিল। এই জটিলতার কারণেই একজন বিদেশী মানুষের পক্ষে আমাদের ভাষা আত্মস্থ করাটা কঠিন হয়ে পড়ে। মানুষের ক্ষেত্রেই যদি এমন কঠিন মনে হয়, তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পক্ষে যে এই ভাষাটিকে আয়ত্ত্ব করা ‘অতিশয়’ কঠিন হবে – সেটা বলাই বাহুল্য! গুগল ট্রান্সলেটরও একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। সে গণিত বোঝে, ভাষা বোঝেনা। তাই এটি নিজের বোঝার সুবিধার জন্য প্রতিটি ভাষাকে গাণিতিকভাবে রূপান্তরের চেষ্টা করে। বাংলাভাষা নিয়ে সেই অর্থে গাণিতিক কাজ একেবারেই হয়নি। তাই গুগল ট্রান্সলেটরের জন্যও ভাষাটা নিয়ে কাজ করাটা বেশ কঠিন। তারপরও অনেক বাংলা ভাষাপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবকরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন ঠিকঠাকমত গুগল ট্রান্সলেটরকে দাঁড় করাবার জন্য। একেবারে প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে বলে এখনো অনেক ভুলভাল দেখাচ্ছে। কিন্তু এসব ভুলভাল ঠিক করার দায়িত্বও কিন্তু আমাদের। সত্যি বলতে কী, এ প্রজেক্টটা এখন ছোট একটা বাচ্চার মত, আপনি যতই এর ভুল শুধরে দেবেন এটি ততই পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে। কিভাবে এসব ভুল সংশোধনে অবদান রাখা যায় – তা নিয়ে ব্লগার জামালউদ্দিন খানের একটা দারুণ লেখা রয়েছে।

Continue reading আলু তবে আলুই রয়ে গেল …

মনা ভাইকে আর কত ধনী করবেন?

বলুন দেখি, কতজন লোক ‘ভ্যাট’ শব্দটার সাথে পরিচিত? উত্তরে নিশ্চয়ই বলবেন যে ‘ভ্যাট’ শুনেনি এমন কেউ আছে নাকি? হয়তো কেউ কেউ আছেন। যারা এখনো শুনেননি তারা দয়া করে একটু এখান থেকে ঘুরে আসুন। সহজ করে বললে, প্রতিটি জিনিস কিনলে তার উপর নির্দিষ্ট হারে একটা কর (ট্যাক্স) দিতে হয় সরকারকে। এই কর বা ট্যাক্সকেই ভ্যাট বলা হয়। আপনার দেয়া ট্যাক্সের এই টাকাটা জমা হয় সরকারী কোষাগারে। এই ট্যাক্সের টাকা দিয়েই কিন্তু দেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্ম হয়ে থাকে। তাই ভ্যাট দেয়া মানে সরকারকে দেশের মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ করে দেয়া।

Continue reading মনা ভাইকে আর কত ধনী করবেন?

হতাশা’র মাঝে এক চিলতে অনুপ্রেরণা

সব বাচ্চাদেরই মনে হয় ছোটবেলার স্বপ্ন থাকে যে তারা লেখাপড়া করে বড় হবে, বড় হলে দেশের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী হবে। তারপর যখন তারা বড় হতে থাকে, তখন তারা বুঝতে পারে যে বড় বড় নেতা-নেত্রী হবার জন্য আসলে লেখাপড়ার কোন দরকারই নেই। যে যত মুর্খ, তার তত বেশি ক্ষমতা, সে তত বড় নেতা। যে যত বড় নেতা, তার তত বেশি সম্পত্তি। এসব নেতারা শেয়ার বাজার কেলেংকারি করলেও তাদের নাম সামনে আসেনা, অন্যের সম্পদ মেরে কেটে জবর দখল করলেও কেউ কিছু বলেনা, দেশটাকে বাপ-দাদার নামে নামকরণ ফেললেও কেউ কিছু আপত্তি করেনা। অন্যের অধিকার বঞ্চিত করাটা এদের পেশা, অন্যকে ধোঁকা দেয়া এদের ধর্ম, মানুষ মেরে ফেলা এদের নেশা। নামের আগে এরা নিজেদের নেতা বললেও, আদতে এরা কুকুর-বিড়ালের চেয়েও নগন্য জীব। নিজের জন্যই এরা বাঁচে – অনেকটা কীট-পতংগের মত।

Continue reading হতাশা’র মাঝে এক চিলতে অনুপ্রেরণা

থিসিসনামা ৪: প্রেজেন্টেশন টিপ্স

সাধারণত ‌থিসিস প্রেজেন্ট করার সময় যে বিষয়ে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য রাখতে হয় সেটা হল, শ্রোতাদেরকে অন্তত পক্ষে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ মিনিট প্রেজেন্টেশন দিয়ে আটকে রাখা দরকার। সময় যত বেশি হবে ততই ভাল। এতে করে প্রেজেন্টেশন শেষে শ্রোতারা থিসিসের খুঁত বের করে প্রশ্ন করার প্রানশক্তি অনেকটাই হারিয়ে ফেলে। তাছাড়া সবাই চায় যে তার প্রেজেন্টেশন এমন হোক যাতে সবাই সেটা মনে রাখে। এসব ছাড়াও থিসিস সম্পর্কীত বিভিন্ন টানাপোড়েন-লাভক্ষতি-টেনশন ইত্যাদি নানারকম চিন্তায় দেখা যায় যে সাইডএফেক্ট হিসেবে গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টরা প্রায়ই নাওয়া খাওয়া ভুলে যায়। অন্যসব ঝামেলা মিটিয়ে ফেললেও সবচেয়ে বড় টেনশন থাকে প্রেজেন্টেশন নিয়ে। তাই প্রেজেন্টেশন কিভাবে করবেন সেই চিন্তায় যদি আপনার রাতের ঘুম হারাম হয়ে গিয়ে থাকে তবে নিচের টিপ্সগুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে দেখতে পারেনঃ

  • প্রেজেন্টেশন শুরুর সময় ডায়াসে দাঁড়িয়ে বলতে হবে – ‘উপস্থিত ভদ্রমহোদয়া ও ভদ্রমহোদয়গণ, দয়া করে উঠে দাঁড়ান, এখন জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হবে…’। এতে করে কমপক্ষে চার মিনিট বাড়তি পাওয়া যাবে।
  • প্রেজেন্টেশনে আগতদেরকে পরিবেশিত প্রতি কাপ চা-কফির জন্য আগে থেকে ঘোষণা না দিয়ে, একটা মূল্য ধার্য করে প্রেজেন্টেশনের মাঝখানে টাকা তোলা যেতে পারে।
  • প্রেজেন্টেশনের মাঝখানেই নির্দিষ্ট সময় পরপর থিসিসের বিভিন্ন টপিক কিংবা অধ্যায় নিয়ে বাংলা সিনেমার মত সখাসখিসহ নাচ-গান করা যেতে পারে। শ্রোতাদের কেউ আপত্তি তুললে বলতে হবে যে এটা একটা ‘ইন্ট্যার‍্যাক্টিভ প্রেজেন্টেশন’!
  • আপনার প্রজেক্টের উপর একটা ডকুমেন্টারি প্রচার করতে পারেন। ডকুমেন্টারিতে যেসব বিষয় অবশ্যই থাকবে – আপনার সুপারভাইজার-কোসুপারভাইজারের দাঁত কেলানো হাসি মুখের ক্লোজআপ কিছু শট, ল্যাবে আপনার আউলা-ঝাউলা সুরতের কিছু ছবি (আশপাশে স্রডিঞ্জার বা ওপেনহাইমারের কিছু সমীকরণবোঝাই হোয়াইট বোর্ড মাস্ট থাকতে হবে), লাইব্রেরিতে টেবিল ভর্তি বইয়ের ফাঁক দিয়ে আপনার ‘পড়ুয়া’ চেহারার কিছু ছবি ইত্যাদি।
  • প্রেজেন্টেশনের মাঝখানে দর্শক-শ্রোতাদের নিয়ে আচমকা মেক্সিকান ওয়েভ শুরু করে দিতে পারেন। প্রতিটা স্লাইড বদল হবার সময় এই ওয়েভ তৈরি করা যেতে পারে।
  • বাচ্চাদের রূপকথা গল্প পড়ে শোনানোর মত করে টেনে টেনে ধীরে ধীরে বক্তব্য পেশ করা যেতে পারে। এতে করে অধিকাংশ লোকজনই ঘুমিয়ে পড়বে। লোকজনকে ঘুম পাড়িয়ে দিতে পারলে জাগ্রত প্রশ্নকারীর সংখ্যা অনেক কমে যাবে।
  • যদি দেখা যায় যে, দর্শকসারি থেকে প্রশ্নের স্রোতে আপনাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবার তোড়জোর চলছে, তবে অজ্ঞান কিংবা হার্ট অ্যাটাকের ভাণ করে নাক-মুখ চেপে ডায়াসে পড়ে যেতে হবে। হাসপাতালে না নেয়া পর্যন্ত এভাবেই পড়ে থাকতে হবে।

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ উপরোক্ত টিপ্সগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়, তবে গ্রেডের উপর কেমন প্রভাব ফেলবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছেনা!

উৎপলের উৎপাত আর কত?

আগেই বলে রাখি যে আমি ক্রিকেটবোদ্ধা নই, ক্রিকেটপ্রেমীও নই। টিভির সামনে টানা বসে ক্রিকেট খেলা দেখিনা, ধৈর্য হয়না। টুয়েন্টি-টুয়েন্টি, ওয়ান্ডে বা টেস্ট যাই হোক না কেন – বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ম্যাচ শেষে ফলাফলটা জেনে নেই। ওটাই আমার জন্য অনেক কিছু। তবে বাংলাদেশের খেলা থাকলে অবশ্য অন্য কথা। টেস্ট ছাড়া বাকী দুটো’র জন্য কিছুক্ষণ পর পরই আপডেট জানা দরকার হয়ে পড়ে। সোজা কথা, দর্শক হিসেবে বাংলাদেশের একজন সাধারণ মাপের দর্শকের চেয়েও আমার অবস্থান অনেক নিচে। ক্রিকেটের প্রতি টান নেই, তবে টান রয়েছে বাংলাদেশের প্রতি। তাই ক্রিকেট খেলতে যখন বাংলাদেশ মাঠে নামে, তখন এই টানটাই আমাকে সেই ম্যাচে বুঁদ হয়ে থাকতে অনুপ্রেরণা যোগায়। তাই আমার এই লেখাটিকে ক্রিকেটিয়-বিশ্লেষণ ধরণের কিছু মনে করবার কোন কারণ নেই। গত কয়েকদিন ধরে উৎপল শুভ্র নামের এক সাংবাদিকের হাগড়পাগড় রিপোর্টিং পড়ে নিতান্তই মেজাজ খারাপ হয়ে এই লেখাটির জন্ম।


মাঝে মাঝে খুব অবাক হই যখন তাকিয়ে দেখি যে ২৩-২৪ বছরের ছেলেগুলো কী দৃপ্তভাবে সামনে থেকে আমার হত দরিদ্র দেশটিকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে! যখন ২৩-২৪ বছরের নিজের দিকে তাকাই, যখন চিন্তা করি যে ষোল কোটি মানুষকে তুলে ধরা ঐ ছেলেগুলোর তুলনায় আমি নিজে কি করেছি, তখন ছেলেগুলোর জন্য এক ধরনের গর্বে বুক ভরে যায়। ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন সাকিবের কথাই ধরুন। ষোল কোটি মানুষের প্রত্যাশা নিয়ে ছেলেটি ১১ জনের একটি দলকে বিশ্ব পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমার ২৩ বছর বয়সে যদি আমাকে এই কাজটা দেয়া হত তাহলে ভয়ে আদৌ নিতাম কিনা কে জানে! অবশ্য আমার নেয়ার আগেও বড় কথা হচ্ছে আমাকে দেয়া হত কিনা! আমি বুকে হাত রেখে বলতে পারি, খেলাটাকে উপভোগ করার যোগ্যতা থাকলেও খেলাটিতে বাংলাদেশের জাতীয় দলের অধিনয়াকত্ব করার নূন্যতম যোগ্যতাও আমার নেই। যে কাজে আমার যোগ্যতা নেই, সেই কাজটিই যখন তরুণ একজন ছেলে অসম্ভব অবিচলভাবে দৃপ্ততার সাথে করে চলেছে তখন তাকে স্যালুট জানাতেই হয়। সতেরই ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিজেদের অধিনায়ককের তাই দেশের মানুষ বরণ করে নিয়েছিল তুমুল হর্ষধ্বনির মাঝ দিয়ে। সেই হর্ষধ্বনি কিন্তু বাংলাদেশ দলের প্রতি দেশের মানুষের বিশ্বাস ও ভালোবাসার অতি ক্ষুদ্র একটা অংশ। সাকিব আল হাসানকে যখন অধিনায়ক করা হয় তখন তার যোগ্যতা, তার মেধা, তার অতীত পারদর্শীতা, সর্বোপরি তার জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতা – সব কিছুকেই বিচার করা হয়েছে। সাকিবকে অধিনায়ক ঘোষণার পর কাউকে প্রতিবাদ তো দূরের কথা, কোন ধরনের আক্ষেপ পর্যন্ত করতে শোনা যায়নি, বরং সবাই আশস্তই হয়েছিল! কারণ সাকিব আল হাসান লোকজনের কাছে সেই বিশ্বাস অর্জন করেছিল।


ভীষণ ব্যস্ততায় ইদানিং দিন কাটাচ্ছি। এরই মাঝে সময় বের করে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতে বিপক্ষে বাংলাদেশের খেলা দেখলাম। আগেই বলেছি ক্রিকেট বুঝিনা। তারপরও ভারতের বিশাল রানের পাহাড় দেখে মন খারাপ হয়েছিল, কিন্তু তামিম আর ইমরুলের ব্যাটিং সূচনা দেখে সেই মন খারাপ ভাবটা বেশিক্ষণ থাকেনি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ম্যাচে হেরে গেলেও অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম যে নিজের ভেতরের মন খারাপ ভাবটা আর ছিলনা। বাংলাদেশের “বিনা যুদ্ধে নাহি দেব ছাড়” ধরণের মানসিকতাটা ছিল দেখার মত। দ্বিতীয় ইনিংস দেখে একবারও মনে হয়নি যে বাংলাদেশ খেলা নিয়ে বিচলিত, তারা আগে থেকেই হার মেনে নিয়েছে – বরং ভারতের মাঝেও একসময় আতংক তৈরি করেছিল। খেলা শেষে যার সাথেই কথা হয়েছে কারো মুখে বাংলাদেশ দলকে আক্রমন করে কিছু বলতে শুনিনি, তাই ভেবেছিলাম যে দলের স্পোর্টসম্যানশিপে সবাই খুশি। ভুল ভেবেছিলাম। সবাই যে খুশি নয় সেটা জানতে পারলাম পরদিন – প্রথম আলোর সাংবাদিক উৎপল শুভ্র’র লেখা পড়ে!


২০শে ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোতে “পরাজয়ে প্রাপ্তি ভবিষ্যতের রসদ” নামে উৎপল শুভ্র’র একটা লেখা বের হয়। লেখাটার প্রায় প্রতিটি লাইনেই বাংলাদেশ দলের পারফর্ম্যান্সে লেখকের হতাশা প্রকাশ পেয়েছে। এক পর্যায়ে টসে জিতে ফিল্ডিং নেয়ার সিদ্ধান্তের জন্য সাকিবকে কাটাছেঁড়া করে ফেললেন। তারপর দিন ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত সাকিবের এক সাক্ষাৎকারে একই লেখক সাকিবকে পুরোপুরি কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে একের পর এক আক্রমন চালিয়ে গেলেন। লেখাটাকে সাক্ষাৎকার না বলে বরং পুলিশি জেরা বললে আরো মানানসই হয়। যেকোন মূল্যেই তিনি চাচ্ছিলেন সাকিবের মুখ থেকে শুধু একটি কথা বের করতে যে “টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে আমি ভুল করেছি!“। তার জেরার শিরোনামটাই ছিল “টস নিয়ে এত কথা বলার কারণ দেখছি না“, পড়ে মনে হচ্ছে যেন সাকিব তার টসে করা ‘ভুল‘টাকে ধামাচাপা দিতে চাইছেন। সেই সাক্ষাৎকারে (পড়ুন ‘জেরা’) করা কয়েকটি নমুনা প্রশ্ন দেখুনঃ

  • টসে জিতে আপনার ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত তো এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’…
  • আমজনতার মুখে মুখে একটা কথা ফিরছে, বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাটিং করলে ভারত চাপে পড়ে যেত। আপনি একমত?
  • ঠিক আছে, আপনি ক্রিকেটীয় যুক্তিবুদ্ধি দিয়েই সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন। কিন্তু ভারতীয় ব্যাটিং-তাণ্ডবের সময় কখনো ‘ভুলই করলাম কি না’ মনে হয়নি?
  • আলোচনাটা কি টিম মিটিংয়ে হয়েছে, নাকি টিম ম্যানেজমেন্টের মধ্যে?
  • প্রশ্নটা আবার করছি, ভারত ৩০ ওভারেই ২ উইকেটে ১৬৯ করে ফেলার পর সিদ্ধান্তটা ঠিক হয়েছে কি না, এ নিয়ে নিজের মধ্যে একটুও দ্বিধাদ্বন্দ্ব দেখা দেয়নি?
  • সিদ্ধান্তটা বুমেরাং হয়ে যাওয়ার মূল কারণ কী?
  • ৩৭০ হয়ে যাওয়ার প্রত্যক্ষ কারণ তো বীরেন্দর শেবাগ। ও যখন ওভাবে মারছিল, অসহায় লাগছিল না?
  • এই ম্যাচ নিয়ে এমন হাইপ, মাঠভর্তি দর্শক—টস করতে নামার সময় কি একটু নার্ভাস লাগছিল?
  • ৩৭১ টার্গেট হয়ে গেলে অধিনায়কের কী-ই বা বলার থাকে! তার পরও জিজ্ঞেস করি, ব্যাটসম্যানদের আপনি কী বলেছিলেন?

বাংলাদেশ এখন আর সেই অবস্থায় নেই যে কেবলমাত্র “আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছি” সেই আনন্দেই সবাই ভাসছে, বরং বাংলাদেশ এখন অনেক পরিণত। প্রতিটি ম্যাচেই জয়ের লক্ষ্য নিয়েই খেলতে নামে। ভারতের বিপক্ষের ম্যাচ হারায় স্বভাবতই দলের মানসিক অবস্থা খারাপ থাকার কথা, আর এ খারাপ সময়ে দলকে সামনের ম্যাচের জন্য চাঙ্গা করে রাখাটাও জরুরি – এটা বোঝার জন্য মনস্তত্ববিদ হবার দরকার পড়েনা। অথচ আমাদের সাংবাদিক সাহেব যেন সেই কাটা গায়ে নুনের ছিটা দিয়ে আনন্দ অন্বেষণে ব্যস্ত! কেন সাকিব টসে জিতে ফিল্ডিং নিলেন, সেই গূঢ় তত্ত্ব জানতে তিনি বদ্ধ পরিকর। তাই ২২শে ফেব্রুয়ারির পত্রিকায়ও দেখা গেল যে “ঝিমিয়ে পড়ল কি বিশ্বকাপ-নগর!” লেখাটিতেও বাংলাদেশ দল কেন নিজেদের উজ্জীবিত করতে শহীদ মিনারে যায়নি সেটা নিয়ে শেষ লাইনে সাকিবকে খোঁচাতে কার্পণ্যবোধ করেননি। শহীদ মিনারে গিয়ে দল মানসিকভাবে চাঙ্গা হত ঠিকই কিন্তু তাই বলে কেন যায়নি সেটা নিয়ে মায়াকান্না করার কোন কারণ তো দেখিনা। একটা কারণ হতে পারে – সাকিবের দোষ ধরা! তার লেখার শেষ লাইনটি ছিল এরকম – “ভালো তো হতোই। কিন্তু বাংলাদেশ দলে এভাবে ভাবার লোক কোথায়?” এর মানে কি? সাকিব দল নিয়ে ভাবেননা? সব ভাবনা কেবল আমাদের উৎপল শুভ্র’র মাথায়?


দান দান তিন দান” কিংবা “দিন দিন তিন দিন“! পর পর তিন দিন ধরে উৎপল শুভ্র সাকিবকে খুঁচিয়েই যাচ্ছেন। খুব জানতে ইচ্ছা করে কেন করছেন তিনি এটা? তিনি কি জানেন যে কত রকম বিচার বিশ্লেষণ আর পরীক্ষার নীরিক্ষার মাধ্যমে একজন অধিনায়ক নির্বাচন করা হয়? তিনি কি জানেন না যে টস জিতে ব্যাটিং বা ফিল্ডিং নেবার স্বিদ্ধান্ত কেবল মাত্র অধিনায়ক নেননা? তিনি কি জানেননা বাংলাদেশ দল গ্রুপের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচটা খেলেছে তাদের প্রথম খেলায়? তিনি কি জানেন যে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আরো ম্যাচ বাকী রয়েছে? মনে হয়না। নাহলে চলমান একটা টুর্নামেন্টে নিজের দেশের অধিনায়কের পেছনে এভাবে আদাজল খেয়ে লাগার অর্থ কি? সাবোটাজ? এ ছাড়া তো আর কিছু মাথায় আসছেনা? তিনি কি ইচ্ছে করেই সাবোটাজ করছেন? ইচ্ছে করেই ভেঙ্গে দিচ্ছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের মানসিক শক্তি? সামনের ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশ যদি খারাপ করে তবে আমার তর্জনী উঠবে উৎপল শুভ্রের দিকে। আমি সব দোষ দিব উৎপল শুভ্র নামের ঐ লোকটাকে, যে কিনা আমার অধিনায়ককে হায়েনার মত নির্লজ্জভাবে কাটাকুটি করেছে!


সাকিব এই অংশটুকু তোমার জন্য ভাই! তুমি যে মাঠে স্পোর্টসম্যানশিপ আর মাঠের বাইরে স্পোকম্যানশিপের পরিচয় দিয়েছ সেটা সত্যিই অতুলনীয়। সত্যি বলতে কী আমার নগন্য ক্রিকেটিয় বিদ্যায় আমি যা বুঝি যে, বাংলাদেশ খুব ভাল এবং যোগ্য একজন অধিনায়কের হাতে রয়েছে, যে কিনা গত কয়েকমাসে আমাদের বড় বড় স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে। উৎপল শুভ্ররা ক্ষণিকের অতিথি, এদেরকে কেউ মনে রাখেনা, মনে রাখবেওনা। দেশের লোক উৎপল শুভ্রকে চেনেনা, ওরা চেনে তোমাকে। তাই তো তুমি যখন রিকশা চড়ে বিশ্বকাপ মঞ্চে প্রবেশ করলে দেশের লোক সজোরে করতালি দিয়ে তোমাকে বরণ করে নিয়েছিল। উৎপল শুভ্ররা কখনোই তোমাকে অনুপ্রেরণা যোগাতে পারবেনা, তাই ভুলে যাও সেসব লোকদের কথা। ষোল কোটি মানুষের লাল-সবুজ পতাকাটিকে তুমি তোমার দলকে সঙ্গী করে এগিয়ে নিয়ে যাও – আমরা সবাই তোমার সাথে আছি।


আর কিছু বলার নেই, কেবলমাত্র নিচের ভিডিওটি ছাড়া!


লেখাটি সচলায়তনে প্রকাশিত।

বাংলাদেশের সমর্থকদের প্রতি জাতীয় ক্রিকেট দলের বোলিং কোচের আহবান!

বিশ্বকাপকে সামনে রেখে গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারিতে বাংলাক্রিকেট ফোরাম এ বাংলাদেশী ক্রিকেট সমর্থকদের প্রতি একটি আবেদন জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বোলিং কোচ ইয়ান পন্ট। মূল ইংরেজি ভাষায় করা পোস্টটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন সামহোয়্যারইন ব্লগের বাবুবাংলা। একই সাথে তাঁর এই বার্তাটুকু যতটুকু সম্ভব সবার কাছে পৌঁছে দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। সবার কাছে বার্তাটি পৌঁছে দেবার উদ্দেশ্যে কোচের লেখা “Request to fans” নামের মূল লেখাটির বঙ্গানুবাদ (অনুবাদকের সাথে যোগাযোগের কোন উপায় না পেয়ে অনুবাদকের অনুমতি ছাড়াই) আমার ব্লগে পোস্ট করছি।

world cup cricket 2011

সমর্থকদের প্রতি আবেদন

বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষের কাছে ক্রিকেট যে কি বিশাল এক আবেগের নাম, তা আমরা বুঝি। আমি, ইয়ান পন্ট আর বাংলাদেশ দলে আমার সহকর্মী জুলিয়ান ফাউন্টেইন; আমরা দুজনই ইংল্যান্ডের মানুষ- সেখানে বার্মি-আর্মি নামের ক্রিকেট সমর্থকগোষ্ঠীও অনেকটা একই রকমভাবে মনে প্রানে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলকে সমর্থন করে।

তবে পার্থক্যের জায়গাটা বোধহয় এটুকুই যে, বার্মি-আর্মিরা এ পর্যন্ত কখনোই তাদের নিজের দলের খেলোয়াড়দের অপমানিত করে দুয়োধ্বনি দেয়নি। সব ব্যঙ্গ-তামাশা আর কটুক্তি তারা যেন জমা করে রাখে শুধু প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের জন্য। এই ব্যাপারটা খুব গুরুত্বপুর্ণ; কারন ভক্ত সমর্থকেরা দলেরই একটা অংশ। তাই প্রকৃত সমর্থকেরা শত ব্যর্থতায়ও নিজের দলের খেলোয়াড়দের দুয়োধ্বনি দিয়ে অপমানিত-লাঞ্ছিত করতে পারে না, কখনোই না। এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের প্রতিটি দর্শক-সমর্থক অবিচল ঐক্যে দলের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেরাই হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশ দলের এক একজন সহকর্মী কিংবা দ্বাদশ খেলোয়াড়। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের এই বড় আসরে বাংলাদেশের দর্শক-সমর্থকেরা এভাবেই দলের জন্য রাখতে পারে বিশাল ভুমিকা।

বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ চায় দলের সব কোচ আর খেলোয়াড়েরা নিঃস্বার্থ ভাবে একে অন্যকে সহযোগিতা করুক, দল ও দেশের জন্য নিজেদের সব সামর্থ্য উজাড় করে দিক। এই দেশের প্রতিটি মানুষ চায় দলের বিপদের মুহূর্তে প্রত্যেকে সামর্থ্যের প্রতিটিকণা ঢেলে দিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত একাট্টা হয়ে লড়াই চালিয়ে যাক।

আমরা চাই বাংলাদেশ দলের সমর্থকেরাও ঠিক একই দৃঢ়তা আর প্রতিজ্ঞা নিয়ে দলের জন্য নিজেদের উজাড় করে দিক।

দেশের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ কি হাতে হাত রেখে বাংলাদেশ দলের পাশে এসে দাঁড়াবে না? এ আমার একান্ত চাওয়াঃ জয়-পরাজয় যাই আসুক, বাংলাদেশ দলের পাশে দাঁড়ান। হৃদয়ের সব আবেগ দিয়ে দুর্বিপাকের মুহুর্তেও দলের পাশে থাকুন। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের আজ এটি এক জাতীয় দায়িত্ব। মনে প্রানে যে দলকে ভালোবাসে, সে কখনোই দলের বিপদের মুহূর্তে তীব্র হতাশায় হাল ছেড়ে দিতে পারে না, পারে না দুয়োধ্বনি দিয়ে নিজ দেশের খেলোয়াড়দের মনোবল চুর্ণ করে মাঠের লড়াইয়ে নিজেদেরকেই পিছিয়ে দিতে।

আমাদের মনে রাখা দরকার মাঠে গালি গালাজ বা কটুক্তি করলে আমরা কেবল আমাদের নিজদের খেলোয়াড়দেরই ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়াবো। বিদেশী খেলোয়াড়েরা আমাদের ভাষা জানেও না, তাই দর্শকদের হতাশা তাদের কোনভাবেই প্রভাবিত করবে না। দর্শকের দুয়োধ্বনিতে যদি কারো পারফর্মেন্সে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তা পড়বে কেবল আমাদের খেলোয়াড়দেরই উপর।

তাই আসুন জয়-পরাজয়ে, সাফল্য-ব্যর্থতায়, সব সময়ে মনে প্রাণে বাংলাদেশ দলের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা এবারের বিশ্বকাপে সারা পৃথিবীকে দেখিয়ে দিই-দলের সমর্থনে, নিজ দেশের জন্য ভালোভাসায় আমাদের সমতুল্য আর কেউ নেই। দেখিয়ে দেই, আমাদের খেলোয়াড়েরা আমাদের গর্বের ধন। দেখিয়ে দেই বাংলাদেশের ১৪ কোটি মানুষের হৃদয়ে তারা এক একজন সংশপ্তক- শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে যারা এই দেশের সন্মানের জন্য, বিশ্বকাপ জয়ের জন্য প্রানপনে লড়ে যায়।

এটি বিশ্বকাপ- সব খেলোয়াড় কিছুটা হলেও মানসিক চাপ অনুভব করবে, খেলার মাঠে যা জন্ম দিয়ে পারে নানা ভুলের। মানসিকের চাপের মুখে খেলোয়াড়েরা কোন ভুল-ভ্রান্তি করলে দর্শক-সমর্থকদের প্রানঢালা সমর্থনই হয়ে উঠবে তাদের জন্য সবচেয়ে বড় আশার সম্পদ। আমাদের দর্শক-সমর্থকদের শতভাগ সমর্থনই পারবে বিশ্বকাপের বড় আসরে খেলোয়াড়দের মানসিক শক্তি যোগাতে আর সাহায্য করবে সব ভুল কাটিয়ে উঠতে।

আমি কাছ থেকে দেখেছি, নিউজিল্যান্ড দল মিরপুরে আমাদের দর্শকদের বিপুল সমর্থন আর চিৎকারের মুখে কি ভীষন দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। দর্শকদের উল্লাস ধ্বনিতে তাদের কান ফেটে যাবার দশা হয়েছিল। বিশ্বকাপে আমি এটাই চাই। দর্শকদের এই প্রবল সমর্থনই আমাদের শক্তি। আমি চাই আমাদের ব্যাটসম্যানদের প্রতিটি রানের পর আনন্দ-হুঙ্কারে ফেটে পড়ুক সমস্ত স্টেডিয়াম। আমাদের বোলারদের প্রতিটি উইকেটের পর দর্শকের উল্লাস ধ্বনি সাত আসমান ছাড়িয়ে যাক। আর প্রতিপক্ষের যে কোন অর্জনকে যেন আমরা স্বাগত জানাই পিন-পতন নিস্তব্ধতায়। এই হুঙ্কার আর নিস্তব্ধতার আলো-ছায়ার খেলা বিচলিত করে দিতে পারে যে কোন প্রবল শক্তিশালী প্রতিপক্ষকেও। আসুন বাংলার মাটিতে খেলতে আসা সব প্রতিপক্ষের পায়ের নিচের মাটি আমরা কাপিয়ে দেই কানফাটানো আওয়াজ আর লাল-সবুজ পতাকায় স্টেডিয়াম ছেয়ে দিয়ে।

দেশের মাটিতে এবারের এই বিশ্বকাপ। এই শিরোপা জয়ের আকাঙ্ক্ষা অন্তরে ধারন করেই আমাদের দল মাঠে নামবে। দলের এই লড়াই তাদের একার নয়, আমাদের প্রতিটি দর্শক-সমর্থক এই লড়াইয়ের অংশীদার। আর অংশীদারিত্বের সাথেই আছে কিছু দায়িত্ব। আমরা আমাদের দেশের সন্তানদের কটুক্তি করবো না, দুয়োধ্বনি তুলবো না। যারা দেশের খেলোয়াড়দের লাঞ্ছিত করে, তারা আমাদের দলের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নের সারথী হতে পারে না। আসুন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা সবাই বিশ্বকাপ জয়ের লড়াইয়ে সামিল হই। বাংলাদেশ দল দেশের মানুষের জন্যই এই লড়াইটুকু করতে চায়। আমরা চাই দেশের সব দর্শক-সমর্থক বিশ্বকাপ উপভোগ করুক। আমরা নিজেরাও চাই এই বিশ্বকাপ উপভোগ করতে আর বিশ্বকাপে আমাদের প্রতিটি সাফল্য বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের সাথে ভাগ করে নিতে।

প্রতিটি খেলায় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ান—একেবারে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত।

বিনীত
ইয়ান পন্ট
বোলিং কোচ, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল


বাংলাক্রিকেট ফোরামে ইয়ান পন্টের কথা মূল পোস্টঃ Requests to fans
সামহোয়্যারইন ব্লগে বাবুবাংলার করা বঙ্গানুবাদঃ সমর্থকদের উদ্দেশ্যে জাতীয় ক্রিকেট দলের বোলিং কোচ ইয়ান পন্টের বিশেষ আহ্ববান