আজকে বিখ্যাত ১২ই জানুয়ারি। তারিখটা বিখ্যাত কারণ এরকমই এক ১২ই জানুয়ারির শীতের সকালে, দৌড় শুরু করে আইইউটির আইওটু (বা আইইউটিয়ান্স-জিরো-টু) ব্যাচটি। অন্য ব্যাচগুলো হেঁটে হেঁটে শুরু করেছিল কিনা জানা নেই, কিন্তু আমরা (বিশেষ করে আমি) আক্ষরিক অর্থেই দৌড় দিয়ে শুরু করেছিলাম আমাদের আইইউটি জীবন! সে বছরের জানুয়ারির ১২ তারিখের সকালবেলাটা ছিল পুরো কুয়াশাঢাকা একটা সকাল। এত ঘন কুয়াশা ছিল যে জানালা দিয়ে বাইরে অন্ধকার দেখা যাচ্ছিল, ফলে ঘুমের রেশ কাটিয়ে যখন বুঝতে পারলাম যে সকাল বেশ কিছু আগেই হয়ে গিয়েছে তখনই শুরু হল দৌড়ঝাঁপ। আমার মত আশপাশের রুমগুলোর ছেলেপেলের মাঝেও দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই দৌড়ঝাঁপ দিয়েই আইইউটি জীবন শুরু!
সেই যে শুরু হল, এরপর কালে কালে কেটে গেল অনেকটা সময়। সেই সময় শুধুই সমৃদ্ধ হবার সময়। পেলাম দিপু-মিফতাহ’র মত অসাধারণ দুই রুমমেট-বন্ধু। পাশেই ছিল শাহান, সাদ, ইমন, সর্প, শাদিদ, সিনা, তাসনিম, বলদা, বিলাই, মীম, ব্যাঙ, লালের মত চমৎকার কিছু প্রতিবেশী। সেই সাথে ছিল জাপানী, ষান্ডা, ঘাসা, বগলা, এঁইরঁকি, লাল-রকি, গুখা, আফসানা, পাঁচু-জামিল, ওয়ালা-জামিল, কোকেন, হাফব্লাড-আশেক, পাখি, কাদু, পাগলা-সবুজ, আঁতেল-সবুজ, কাউয়া, বন্ধু, গাবড়, ম্যাচো, দাদা, চুনু, চিকি, মহেষ, আব্বু, ভাতিজা, সখিনা, গরীব-আজমান, বদু, রাতুল, মোয়াক্ষার, পারু, শাকিল, রায়হান, মালেক, ভাই-তুষার, কপি-জাকি, হাসান-ভাই, ফুয়াদ, মিষ্টি, আলোকিত-সাজেদ, হ্যান্ডসাম-সাদাত – আরো কত জন! সবার নাম-ধাম লিখতে গেলে এই লেখাটাই বিশাল একটা রোলকল খাতা হয়ে যাবে! খুব মিস করি সেই জীবনটাকে, যেই জীবনটাতে সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠেই কোনমতে জামাকাপড় পাল্টে ক্লাসে গিয়ে চোখ কষ্ট করে খোলা রেখে লেকচার শুনতে হত, ১৫ মিনিটের ক্লাসব্রেকে ক্যান্টিনে গিয়ে সকালের নাস্তা সারা হত, ক্লাসের ফাঁকে রেলিংএ পা ঝুলিয়ে আড্ডা মারা হত, কম্পিউটার ল্যাবে গিয়ে ইমেইল চেক করা হত, লাঞ্চের পর বিছানায় চিৎপটাং ঘুম দেয়া যেত, বিকালে সবাই দলবেঁধে একসাথে হাঁটাহাঁটি করা হত, শাহী মামা’র দোকানে পুরি-সিঙ্গারা খাওয়া হত, রাতের ডিনার সেরে আইইউটিকে (প্রায়) একটা চক্কর দিয়ে হাঁটা হত, তারপর রুমে ফিরে আজাইরা গ্যাঁজানো হত, কখনো কখনো সবাই মিলে ছাদে গিয়ে পানির ট্যাংকের উপর বসে থাকা হত, বোনাস হিসেবে বিলাইয়ের গান শোনা হত – আরো কত কী! সেই জীবনটাতে রঙের ছড়াছড়ি অনেক বেশি ছিল। সেইসব দিনগুলোর সাথে তুলনা করলে এখনকার জীবন অনেক বেশি পানসে লাগে। রঙিন ঐ জীবনটার শুরু হয়েছিল সেই বারই জানুয়ারিতে।
এখনো যখন পেছনে ফিরে দেখি, মিস্তিরি হবার প্রত্যয়ে শুরু করা সেই দিনটা আজও প্রেরণা যোগায়। এ দিনটা ছিল আমাদের শুরুর বিন্দু, আমাদের নতুন জীবনের সূচনা লগ্ন, জিরোটু ব্যাচের জন্মক্ষণ, আমাদের ব্যাচের জন্মদিন, আমাদের জন্মদিন! শুভ জন্মদিন আইইউটিয়ান্স-জিরো-টু ব্যাচ। কেমন আছিসরে সবাই? তোদের অনেকের সাথেই সেভাবে যোগাযোগ নেই, অনেকেই আমার মত দেশের বাইরে, অনেকে একলা থেকে দোকলা হয়ে তেকলা-চাকলাও হয়ে গিয়েছিস, তারপরও যে যেখানেই থাকিস না কেন সবার প্রতি হৃদয়ের গভীর থেকে শুভ কামনা রইল।
শুভ জন্মদিন দোস্তরা!
বেশ লাগলো আপনার কথাগুলো পড়ে। অতীতে ফিরে যেতে সবাই চায়, আমিও মিস করি এআইইউবির দিনগুলো। যদিও আমাদের হোস্টেল ছিল না, ছিল অন্যরকম ভালোলাগা।
আইইউটি জিরোটু ব্যাচের প্রত্যেকের জন্য রইলো শুভকামনা।
আপনি দোকলা হচ্ছেন কবে ?
একলা থাকার অনেক সুবিধা, জীবনটা লিনিয়ার ফাংশন মেনে চলে। দোকলা হলেই তো সেকেন্ড ডিগ্রি ইকুয়েশন, নন-লিনিয়ার ফাংশনের ছড়াছড়ি! 😛 আমার কাছে লিনিয়ার ফাংশনটাই ভালো লাগছে… এখনো! 😀
Bhalo laglo pore.
কীরে! তুই কই ডুব মারলি? তোর কোন দেখা নাই!
hahaaha…..
ekhane to dekhi sob valo valo kotha lekha.
Guta khaiya gase utha-r kotha nai, class bunk mere dating e chole jaoya-r kotha nai, Shara-rat jaiga thaika shokal er class miss kora-r kotha nai… :p
তোর লেখাটা পরে একটা গানের লাইন মনে আসলোঃ
” যত দূরে যাই, জানিনা কবে,
জেনে রেখ শুধু, ফের দেখা হবে ”
ভাল থেক বন্ধু 🙂
got nostalgic…….good wishes to everyone