বাংলায় লিখুন বাংলা!

মোবাইলে কিংবা কম্পিউটারে যারা টপাটপ বাংলিশ এ লিখে যাচ্ছে,তাদের কাছে জিনিসটা সুখকর হতে পারে, কিন্তু আমার মত প্রচুর মানুষের কাছে ব্যাপারটা কিন্তু খুবই পীড়াদায়ক! আগে বলে নেই- “বাংলিশ” বলতে আমি “বাংলা ভাষাকে ইংলিশ অক্ষর দিয়ে লেখা” বোঝাচ্ছি! এটার আরেকটা নাম হচ্ছে “টাকলা”। বাংলিশ বা টাকলা কেন পীড়াদায়ক তা বুঝতে নিচের স্ক্রিনশটগুলো “কষ্ট করে” পড়ুন।


অ্যাজকে কাটপদি বেল্লুর ট্রেন স্টেশনে আমার পারশেনাল মুবেইল টা হ্যারেয়ে জায়ী ... আয়ী মুহুরততে কারো শাট্টে যগা যগ কুরার মুট্টো ন্যামব্যার নেয়ী ... থেয়ী শুবায়ইর প্রুট্টে অনরড রয়ীলো যার যার মোবেইল ন্যামবুর টা আমার কিউমেন্ট বক্স ও ইনবক্সে ডেলে কুভ কশি হুবো  Continue reading বাংলায় লিখুন বাংলা!

ভাষা বিপর্যয়ঃ রোমানাইজড বাংলা ভাষা

বেশিদিনের কথা নয় – বছর দশেক আগেও বাংলাভাষাভাষীদের কাছে কম্পিউটারে বাংলা বর্ণমালায় বাংলা লেখা ছিল স্বপ্নের মত। সেসময় বাজারে বিজয় নামে বাংলা লেখার একটা সফটওয়্যার পাওয়া যেত, যার বাজারমূল্য ছিল বেশ চড়া, তার উপর এতে আবার ইউনিকোড বাংলা লেখা যেতনা। ফলে বিজয় দিয়ে লেখা বাংলা বর্ণগুলো অন্য কম্পিউটারে পড়ার জন্যও অনেক হ্যাপা করতে হত। মনে হত কম্পিউটারের মত “অভিজাত” জায়গায় বাংলা বর্ণমালার বুঝি কোন স্থান নেই। তাই তখন রোমান অক্ষর (A, B, C, D ইত্যাদি) দিয়েই লোকজন বাংলা উচ্চারণে ইন্টারনেট লেখার চেষ্টা করত। কিন্তু এখন সেই দিন নেই। এরই মধ্যে বাংলার একঝাঁক মেধাবী জেনারেশন বাংলা ভাষার প্রতি গভীর মমত্ববোধের নিদর্শন হিসেবে কম্পিউটারে বাংলা লেখার বেশ কয়েকটি সফটওয়্যার বানিয়ে ফেলে। শুরু হয় অভ্র, প্রভাত, ইউনিজয়, জাতীয় প্রভৃতি কিবোর্ডের পথ চলা। খুবই সহজ এসব কিবোর্ড দারুণভাবে রপ্ত করতে একজন বাংলাভাষীর খুব বেশি হলে সপ্তাহখানেক লাগে। শুধু তাই-ই না, সবার কথা মাথায় রেখে এসব কিবোর্ডের ডেভেলপাররা সফটওয়্যারগুলোকে বিনাপয়সায় ব্যবহারের সুযোগ করে দিলেন। সবার হাতে হাতে চলে এল এসব সফটওয়্যার, শুরু হল ইন্টারনেটে বাংলা বর্ণমালার জোয়ার। বাংলা বর্ণমালা কম্পিউটারের অভিজাত জায়গায় নিজের আসন পাকপোক্ত করে নেয়। ইমেইল, ব্লগ, ফেসবুক, টুইটার – সবখানে বাংলা বর্ণমালা যেন রাজাসনে আসীন হল। ফলশ্রুতিতে ইন্টারনেটে ঢুকলেই নিজের বর্ণমালায় নিজের ভাষার লোকদের দেখি, কথা বলি – কী যে ভালো লাগে তা বলার মত না।

কিন্তু তারপরও বেশ কিছু লোক আছে, যারা এখনো রোমান অক্ষরে বাংলা লিখে চলেছেন। কম্পিউটারে বাংলা বর্ণমালার এই জোয়ারের সময়ও তারা যেন পণ করে রয়েছেন যে তারা সেই রোমানাইজড বাংলাতেই লিখবেন। এখানেই আমার আপত্তি। রোমান হরফে ইংলিশ লিখুক – কোন সমস্যা নেই। কিন্তু বাংলাকে কেন রোমান হরফে লিখতে হবে? বাংলার তো নিজেরই বর্ণমালা আছে! শুধু তাই না – এরা বাংলাকে রোমান হরফে লিখতে গিয়ে বিদঘুটে সব বাংলা লিখে – যেমন নিচের স্ক্রিনশটটি দেখুন জনৈক মাসুদ রানা কী লিখেছেন!

পড়তে পারছেননা তো? উনি যা লিখেছেন তার উচ্চারণ হচ্ছেঃ

চিথি তা পদে গুড মনে হল , মোবাইল কথা বলের চেয় , চিথি লেখা ভাল , তায় আমরা চিথি লেখা সিচব

Continue reading ভাষা বিপর্যয়ঃ রোমানাইজড বাংলা ভাষা

অবশেষে লিনাক্সে অভ্র আসিলো!

কোমলমতি এই নাদানের মরা কান্নায় বোধকরি অবশেষে অভ্র জনকের ধ্যান ভাঙ্গিল। তিনি অভ্রকে লিনাক্সের পরিসরে আনিবার জন্য উঠিয়া পড়িয়া লাগিয়াছিলেন। তারই ফলস্বরূপ বারোখান ঘন্টক পূর্বে সকল বাধা অতিক্রম করিয়া লিনাক্সের মহিমান্বিত জগতে অভ্র প্রবেশ করিল। লিনাক্স ব্যবহারকারিগনদের নিকট এই সংবাদ যেন ভাদ্র মাসের সুপরিচিত আউলাটক্কা গরমের মধ্যে ভারিবর্ষনের ন্যায় সুসংবাদের জলধারা স্বরূপ বর্ষিত হইয়াছে। লিনাক্স অনুরাগীগন অদ্য হইতে অভ্রের জাদুকর স্পর্শ লিনাক্সে চাখিয়া দেখিবার সুযোগ পাইবেন।

আপাতত ইহা কেবলমাত্র উবুন্টু ৯.০৪ এবং লিনাক্স মিন্ট ৭ এ পরীক্ষা করা হইলেও অতি শীঘ্রই ইহা অন্যান্য লিনাক্সের জন্য মুক্ত করা হইবে।

পরিশেষে যাহারা ইহা চাখিয়া দেখিতে চান তাহারা দয়া করিয়া এইখানে একটিবার ভ্রমন করিয়া আসুন।

লিনাক্স মিন্টে হড়বড় করিয়া চলিতেছে অভ্র!
লিনাক্স মিন্টে হড়বড় করিয়া চলিতেছে অভ্র!

লিনাক্সগুরুকূলের নিকট খোলা পত্র

সকল শ্রদ্ধেয় লিনাক্স বোদ্ধাগণ,

অনুগ্রহপূর্বক বয়ঃশ্রেণী অনুসারে আমার সম্ভাষন গ্রহন করিবেন। আশাকরি পরিবার পরিবর্গের সহিত একপ্রকার কুশলেই রহিয়াছেন।

চরম বিপদে পড়িয়া এই পত্রখানি লিখিতেছি। পুর্বেই বলিয়া রাখিতেছি আমার টেকি জ্ঞান অত্যন্ত নিম্ন পর্যায়ের। আমার গণকযন্ত্র সম্পর্কিত অজ্ঞানতাকে ক্ষমা সুন্দর চক্ষে দেখিবেন বলিয়া আশা করিতেছি। যদি কেহ পত্রখানির জবাব দেবার প্রয়োজন অনুভব করেন তবে তাহা দিতে কোন দ্বিধা করিবেননা।

পরসমাচার এই যে গত এক বৎসর ধরিয়া অভ্র নামক চাবির বাক্স (কীবোর্ডের বাংলা করিলে ইহাই দাঁড়ায়) ব্যবহার করিয়া আমার মত নাদান মানুষ (যাহারা বিজয় বা ঐ ধরনের লে-আউট রপ্ত করিতে অপারগ) বাংলা ভাষায় জালের জগতে মাতিয়া উঠিয়াছে। ইহাতে বাংলা ভাষার কতটুকু ক্ষতি সাধিত হইয়াছে তাহা সঠিকভাবে নিরূপন করা মুশকিল, তবে নাদান প্রজাতি যাহারা রোমান অক্ষরে বাংলা লিখিতে অভ্যস্ত ছিল তাহাদের যে অশেষ উপকার সাধিত হইয়াছে তাহা নিন্দুক জনেও অকপটে স্বীকার করিবে। সত্য বলিলে বলিতে হয়, অভ্র আছে বলিয়াই আমি গণকযন্ত্রে বাংলা লিখিতে পারিতেছি। অন্যথায় সমগ্র জীবন ভরিয়া আংরেজীতে লিখিতে হইত।

avro_keyboard

Continue reading লিনাক্সগুরুকূলের নিকট খোলা পত্র