থিসিসনামা ৪: প্রেজেন্টেশন টিপ্স

সাধারণত ‌থিসিস প্রেজেন্ট করার সময় যে বিষয়ে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য রাখতে হয় সেটা হল, শ্রোতাদেরকে অন্তত পক্ষে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ মিনিট প্রেজেন্টেশন দিয়ে আটকে রাখা দরকার। সময় যত বেশি হবে ততই ভাল। এতে করে প্রেজেন্টেশন শেষে শ্রোতারা থিসিসের খুঁত বের করে প্রশ্ন করার প্রানশক্তি অনেকটাই হারিয়ে ফেলে। তাছাড়া সবাই চায় যে তার প্রেজেন্টেশন এমন হোক যাতে সবাই সেটা মনে রাখে। এসব ছাড়াও থিসিস সম্পর্কীত বিভিন্ন টানাপোড়েন-লাভক্ষতি-টেনশন ইত্যাদি নানারকম চিন্তায় দেখা যায় যে সাইডএফেক্ট হিসেবে গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টরা প্রায়ই নাওয়া খাওয়া ভুলে যায়। অন্যসব ঝামেলা মিটিয়ে ফেললেও সবচেয়ে বড় টেনশন থাকে প্রেজেন্টেশন নিয়ে। তাই প্রেজেন্টেশন কিভাবে করবেন সেই চিন্তায় যদি আপনার রাতের ঘুম হারাম হয়ে গিয়ে থাকে তবে নিচের টিপ্সগুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে দেখতে পারেনঃ

  • প্রেজেন্টেশন শুরুর সময় ডায়াসে দাঁড়িয়ে বলতে হবে – ‘উপস্থিত ভদ্রমহোদয়া ও ভদ্রমহোদয়গণ, দয়া করে উঠে দাঁড়ান, এখন জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হবে…’। এতে করে কমপক্ষে চার মিনিট বাড়তি পাওয়া যাবে।
  • প্রেজেন্টেশনে আগতদেরকে পরিবেশিত প্রতি কাপ চা-কফির জন্য আগে থেকে ঘোষণা না দিয়ে, একটা মূল্য ধার্য করে প্রেজেন্টেশনের মাঝখানে টাকা তোলা যেতে পারে।
  • প্রেজেন্টেশনের মাঝখানেই নির্দিষ্ট সময় পরপর থিসিসের বিভিন্ন টপিক কিংবা অধ্যায় নিয়ে বাংলা সিনেমার মত সখাসখিসহ নাচ-গান করা যেতে পারে। শ্রোতাদের কেউ আপত্তি তুললে বলতে হবে যে এটা একটা ‘ইন্ট্যার‍্যাক্টিভ প্রেজেন্টেশন’!
  • আপনার প্রজেক্টের উপর একটা ডকুমেন্টারি প্রচার করতে পারেন। ডকুমেন্টারিতে যেসব বিষয় অবশ্যই থাকবে – আপনার সুপারভাইজার-কোসুপারভাইজারের দাঁত কেলানো হাসি মুখের ক্লোজআপ কিছু শট, ল্যাবে আপনার আউলা-ঝাউলা সুরতের কিছু ছবি (আশপাশে স্রডিঞ্জার বা ওপেনহাইমারের কিছু সমীকরণবোঝাই হোয়াইট বোর্ড মাস্ট থাকতে হবে), লাইব্রেরিতে টেবিল ভর্তি বইয়ের ফাঁক দিয়ে আপনার ‘পড়ুয়া’ চেহারার কিছু ছবি ইত্যাদি।
  • প্রেজেন্টেশনের মাঝখানে দর্শক-শ্রোতাদের নিয়ে আচমকা মেক্সিকান ওয়েভ শুরু করে দিতে পারেন। প্রতিটা স্লাইড বদল হবার সময় এই ওয়েভ তৈরি করা যেতে পারে।
  • বাচ্চাদের রূপকথা গল্প পড়ে শোনানোর মত করে টেনে টেনে ধীরে ধীরে বক্তব্য পেশ করা যেতে পারে। এতে করে অধিকাংশ লোকজনই ঘুমিয়ে পড়বে। লোকজনকে ঘুম পাড়িয়ে দিতে পারলে জাগ্রত প্রশ্নকারীর সংখ্যা অনেক কমে যাবে।
  • যদি দেখা যায় যে, দর্শকসারি থেকে প্রশ্নের স্রোতে আপনাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবার তোড়জোর চলছে, তবে অজ্ঞান কিংবা হার্ট অ্যাটাকের ভাণ করে নাক-মুখ চেপে ডায়াসে পড়ে যেতে হবে। হাসপাতালে না নেয়া পর্যন্ত এভাবেই পড়ে থাকতে হবে।

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ উপরোক্ত টিপ্সগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়, তবে গ্রেডের উপর কেমন প্রভাব ফেলবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছেনা!