ময়লা যুদ্ধ!

ধরুন আপনি এমন একজন মানুষ যিনি রাস্তায়-পার্কে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলেন। ময়লা বলতে আমি কলার খোসা, চিপ্সের প্যাকেট, বাদামের ঠোঙ্গা, চকলেটের মোড়ক, সিগারেটের প্যাকেট, পানির বোতল থেকে শুরু করে আপনার ময়লা-ছেঁড়া-ফাটা কাপড় সহ সবকিছুই বোঝাচ্ছি।

আপনি একদিন ফুটপাথ দিয়ে হাঁটার সময় অভ্যাসবশত কলা খেয়ে খোসাটা ফুটপাথে ফেলে দিলেন।

সেই খোসায় পিছলে অন্য আরেক লোক ফুটপাথ থেকে রাস্তায় গিয়ে পড়লেন।

রাস্তায় বাসওয়ালারা যেহেতু নিজেদের স্পেসশিপের ড্রাইভার মনে করে সেহেতু তারা রাস্তায় পড়ে থাকা লোকটার উপর দিয়ে বাস উড়িয়ে নেবার চেষ্টা করল। ফলাফলে লোকটি পিষ্ট হয়ে মারা গেলেন।

লোকটা মারা যাওয়ায় লোকটার আত্মীয়-বন্ধুরা মিলে সেই বাস কোম্পানির বাসগুলো ভাংচুর করলো, আগুন ধরালো। একপর্যায়ে বাসের ডিজেলের ট্যাংকে আগুন ধরে প্রচন্ড বিস্ফোরণ ঘটলো। Continue reading ময়লা যুদ্ধ!

(প্রায়) জ্বালানী ছাড়া বিদ্যুৎ – ক্যামনে কী!

গত বছর জ্বালানীবিহীন বিদ্যুৎ নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম। এই বছর প্রায় একই কাহিনী নিয়ে আবার লিখতে হচ্ছে! এবারের কাহিনীটি এসেছে দৈনিক কালের কন্ঠদৈনিক জনকন্ঠ নামে বাংলাদেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রে। খবরটিতে বলা হয় – নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জালাল উদ্দিন দীর্ঘ গবেষণায় সফল হয়ে তৈরি করেছেন খরচ সাশ্রয়ী এক বিদ্যুৎ উৎপাদন যন্ত্র। তাঁর তৈরি অভিনব বিদ্যুৎ উৎপাদনের এই যন্ত্রটিতে ১০ মিনিট জ্বালানী ব্যবহারের পর যন্ত্রটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। জালাল সাহেব সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছেন – খুবই আনন্দের কথা। কিন্তু উনি পদার্থবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠিত সূত্রকে কাঁচকলা দেখিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছেন – এটা মোটেও আনন্দের কথা নয়।

নিজের উদ্ভাবিত বিদ্যুৎ উৎপাদন যন্ত্রের সামনে জালাল উদ্দিন। ছবি : কালের কণ্ঠ

Continue reading (প্রায়) জ্বালানী ছাড়া বিদ্যুৎ – ক্যামনে কী!

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি – একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি: পরিবর্ধিত নতুন সংস্করণ

একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য যে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সিলেবাস অনুযায়ী “তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি”র উপর আমার লেখা একটি বই গত বছর বাজারে এসেছিল – সেটা প্রায় সবাই জানে, মোটামুটি পুরানো একটা বিষয়। নতুন বিষয় হল যে, এই বছর বইটির পরিবর্ধিত নতুন সংস্করণ বের হচ্ছে। ছাপার ও বাঁধাইয়ের কাজ শেষ। এখন শুধু বইয়ের দোকানে আসার পালা।

Continue reading তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি – একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি: পরিবর্ধিত নতুন সংস্করণ

ইঞ্জিনিয়ার সগির উদ্দিন

১।

তোমরা হয়তো ইঞ্জিনিয়ার সগির উদ্দিনকে চিনবেনা। এই মানুষটাকে না চেনাটা দোষের কিছু না, সত্যি বলতে কী – ওনাকে অনেকেই চিনেনা। আমিও চিনতামনা। আমি যে খুব বেশি মানুষকে চিনি তা অবশ্য না। অনেক সময় নিজের আত্মীয় স্বজনদেরই ঠিকঠাক মত চিনতে পারিনা। তাই কোন বিয়ে বা মুসলমানী টাইপের দাওয়াতে যখন সব আত্মীয়রা এক হয়, তখন আমাকে অপদস্থ করার জন্য তারা এক নিষ্ঠুর খেলায় মেতে উঠে। চারপাশে সবাই আমাকে কীভাবে কীভাবে যেন ঘিরে ধরে ফেলে, যেন আমি কেটে পড়তে না পারি। তারপর একজন একজন করে আমার কাছে আসে, আর জিজ্ঞেস করে – “আমাকে চেনো? বলতো আমি কে?”। তখন আমি তাকে প্রাণপণে মনে করার চেষ্টা করতে থাকি, এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই আমি সেই কাজটা ঠিক করে করতে পারিনা। তখনই চারদিকে একটা হাসির রোল উঠে। সবাই মাথা নেড়ে একটাই কথা বলতে থাকে – “বলেছিলাম না পারবেনা!”

যাই হোক, আমার কথা বাদ। আমি বরং ইঞ্জিনিয়ার সগির উদ্দিনকে নিয়ে কথা বলি। সগিরউদ্দিনের সাথে আমার প্রথম দেখা হওয়ার ব্যাপারটা মোটেও সাদামাটা ছিলনা। ভাইয়া-ভাবীকে নিয়ে ঢাকায় থাকার মত একটা বাসা খুঁজছিলাম। ভাইয়া চট্টগ্রামে চাকরি করত। তার ঢাকায় বদলি হয়ে যায়। তাই সবাইকে নিয়ে ঢাকায় থাকার মত বাসা খোঁজার জন্য আমাকেই ঢাকা পাঠিয়ে দেয়া হল। আমি অবশ্য বেকার মানুষ, ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়ে রেজাল্টের জন্য অপেক্ষা করে আছি। এই সময়ে ঢাকায় বাসা খুঁজতে যাবার আইডিয়াটা মন্দ লাগেনি। ঢাকায় এসে এক বন্ধুর বাসায় উঠলাম। প্রতিদিন সকাল বেলা নাস্তা খেয়ে রুটিন করে বিভিন্ন এলাকায় বাসা খুঁজতে বের হই। বাসা খুঁজতে গিয় টের পেলাম যে, মন মত বাসা পাওয়া বেশ ঝক্কির ব্যাপার। ঢাকার বাসাগুলো সব ছোট ছোট খুপরির মত। কোন বাসাই পছন্দ হয়না। আর যদি বাসা পছন্দ হয়ও, বাসা ভাড়ার দাম পছন্দ হয়না। আবার সব পছন্দ হলে বাড়িওয়ালা পছন্দ হয়না। মহা ঝামেলার ব্যাপার!

মহা ঝামেলার এই ব্যাপার মাথায় নিয়ে, একদিন লালমাটিয়া এলাকায় বাসা খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত হয়ে বিকাল বেলায় লালমাটিয়ার মাঠে হাত পা ছড়িয়ে বসে ছিলাম। যখন মন উদাস উদাস লাগে তখন এই কাজটা আমি প্রায়ই করি। বসে থাকলে কেন জানি মন উদাস ভাবটা চলে যায়। মাঠে বসে বাচ্চাদের ক্রিকেট খেলা দেখছি। দেখতে যে খুব ভাল লাগছিল তা না, বরং বেশ ভয় ভয় লাগছিল। মনে হচ্ছিল এই বুঝি বল আমার মাথায় পড়ল। এ জন্য সারাক্ষণ বলের দিকে চোখ রেখে বাড়ি ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন হাবিজাবি চিন্তা করছিলাম। এমন সময় হুড়মুড় করে কী যেন একটা আমার উপর পড়ে গেল! শুধু পড়েই ক্ষান্ত হয়নি, আমাকে ভিজিয়েও দিল। হঠাৎ এরকম আচমকা আক্রমনে আমি হতবুদ্ধি হয়ে গেলাম। মনে হল সারা শরীরে আঠাল কিছু একটার স্রোত বয়ে গেছে। বুদ্ধি ফেরত আসতেই চারদিকে তাকিয়ে দেখি বাচ্চা ছেলেপিলেরা আমার দিকে তাকিয়ে আঙ্গুল উঁচিয়ে হাসছে। বাচ্চারা খুব নিষ্ঠুর হয়। আমি আঠালো পদার্থে মাখামাখি হয়ে আছি, আর এরা সেটা নিয়ে হাসাহাসি করছে! কী পাষন্ড! এর মধ্যে আঠালো পদার্থটার কিছু অংশ বেয়ে বেয়ে মুখে গেল। বাহ, বেশ মিষ্টি মিষ্টি লাগছে। আমি একটু চেটে পুটে খাওয়ার চেষ্টা করতে থাকি।
Continue reading ইঞ্জিনিয়ার সগির উদ্দিন

জ্বালানী ছাড়া বিদ্যুৎ – ক্যামনে কী!

ইন্টারনেটে একটা লিংক দেখে চোখ আটকে গেল। সেখানে দাবী করা হচ্ছে জ্বালানীবিহীন বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন দিনাজপুরের শাহিদ হোসেন নামের এক তরুণ। এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেল, গ্যাস কিংবা কয়লা ব্যবহার করা হয়। এগুলো ছাড়াও সূর্যের আলো, বাতাসের গতি কিংবা পানির স্রোতের শক্তিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। শাহিদের “জ্বালানি ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদন” দাবী অনুসারে বিদ্যুৎ উৎপাদনে এগুলো কিছুই লাগবেনা। এবং এইখানেই সমস্যা। একজন ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ব্যপারটা মেনে নেয়া আমার জন্য বেশ কষ্টসাধ্য।
Continue reading জ্বালানী ছাড়া বিদ্যুৎ – ক্যামনে কী!

কুরবানী ২০১৪

“তাহলে লিখে দেই যে গরুর রং শ্যামলা?” – লোকটা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আমার আর মিরাজ মামার দিকে তাকিয়ে রইল। মিরাজ মামার ততক্ষণে ধৈর্য বলতে যে জিনিসটা থাকার কথা ছিল সেটা বাতাসে মিশে গেছে। ধৈর্যহারা মিরাজ মামাকে দেখতে তেলেগু সিনেমার হিরোদের মত লাগছিল – যারা এক ঘুষিতে মানুষ তো মানুষ, গাড়ি পর্যন্ত ভর্তা করে ফেলে। তেলেগু সিনেমার নায়কদের মতই মিরাজ মামা তখন কটমট করে লোকটার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। আমি ব্যপারটাকে আয়ত্ত্বে আনার জন্য তাড়াতাড়ি বললাম – “জ্বী ভাই লিখে দেন – গরুর গায়ের রং শ্যামলা!”

আমার কথা শুনে লোকটা মহা উৎসাহে লিখে দিল যে গরুর গায়ের রঙ শ্যামলা। লোকটার উৎসাহ দেখে মিরাজ মামার মনে কি খেলা করছিল জানিনা, কিন্তু আমার বারবার মনে হচ্ছিল যে কী কুক্ষণেই যে হাসিল দেবার জন্য এই লোকটার খপ্পরে পড়লাম!

এই কাহিনীর শুরু গতকালকে, ঈদের ঠিক দুইদিন আগে, যখন গাবতলী থেকে আমাদের আর মিরাজ মামার গরু দুটো কেনা হল। গরু কেনার পর গরু দুটোকে বাসায় নেবার জন্য নীল রংয়ের পিকআপ ভ্যান ঠিক করা হল। গরু দুটোকে পিকআপ ভ্যানে তুলে ফেলার পর ছোটমামা আর আব্বুকে পিকআপের সামনে রেখে আমি আর মিরাজ মামা ছুটলাম হাসিলের কাউন্টারের দিকে। কয়েক মিনিটের ব্যাপার। হাসিলের টাকা দেয়া হয়ে গেলেই গরু দুটো নিয়ে পিকআপ ভ্যান ছুটবে ধানমন্ডির দিকে। একটা গরু নামবে মিরাজ মামার বাসায়, আরেকটা আমাদের বাসায়।

Continue reading কুরবানী ২০১৪

ব্রাজেন্টিনা ও বাংলাদেশ

বাংলার জনগন আসলে ফুটবলকেই প্রথম ভালবেসেছিল, কিন্তু পরে পারিবারিক চাপে পড়ে ক্রিকেটকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছে।

চারপাশে বিশ্বকাপ উন্মাদনা দেখে তাই-ই মনে হয়। সুন্দরবনের জনবিরাণ কিছু এলাকা ছাড়া বাংলাদেশে এই মুহুর্তে কোন খোলা জায়গা নাই। যেদিকেই তাকান, দেখবেন চারপাশে বিভিন্ন দেশের পতাকা পতপত করে উড়ছে। বিভিন্ন দেশ বললে অবশ্য কিছুটা ভুল হবে। বলা উচিত সাদা-আকাশী আর হলুদ-সবুজ পতাকায় চারদিক ছেয়ে গেছে। মাঝে মাঝে ইতালি-জার্মানি আর হালের ক্রেজ স্পেনের কিছু পতাকাকে সংখ্যালঘু হিসেবে উড়তে দেখা যায়। শুধু কি পতাকা, লোকজনের জামার রং পর্যন্ত পাল্টে গেছে। শুধু অল্পবয়সী ছেলেপেলেরাই নয়, বরং প্রচুর সংখ্যক আঙ্কেল-আন্টিকেও চারপাশে হলুদ-আকাশী জার্সি পড়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে! আর্জেন্টিনার জনসংখ্যা প্রায় ৪ কোটি। আর বাংলাদেশের ১৬ কোটি জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক যদি আর্জেন্টিনার সাপোর্টার হয়, তাহলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৮ কোটি (আমার বিশ্বাস সংখ্যাটা আরও বেশিই হবে, কোন এক অদ্ভুত কারণে বাংলার সিংহভাগ জনগন ৩০ বছর ধরে কোন বিশ্বকাপ না জেতা এই দলটিকে অকুন্ঠ সমর্থন দিয়ে যায়)। অর্থাৎ বিশ্বে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বেশি সাপোর্টার আর্জেন্টিনার বাইরের আরেকটা দেশে! পৃথিবীর আর কোন দেশে এমন হয় বলে আমার জানা নেই। এরই নাম বাংলাদেশ! আমার ব্যক্তিগত ধারণা, ফুটবল নিয়ে চার বছর পর পর এক মাসের জন্য আমাদের দেশে যে ভয়ানক মাতামাতি হয়, তা ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনার চেয়ে কোন অংশে তো কম নয়ই, বরং ক্ষেত্র বিশেষে তা অনেক বেশি। শুধু একটাই আফসোস, বিশ্ব আমাদের ঘুর্ণিঝড়প্রবন, দরিদ্র, নদীমাতৃক দেশ হিসেবে জানে, কিন্তু পরম ফুটবলপ্রেমী জাতি হিসেবে চেনেনা।

Continue reading ব্রাজেন্টিনা ও বাংলাদেশ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি – নিজেই যখন লেখক!

আমার লেখালেখির জগৎটা খুবই ছোট ছিল। নিজের ব্লগে লিখতাম, পাশাপাশি একটি কমিউনিটি ব্লগ ও কিছু ফোরামে অংশগ্রহণ করতাম – এই নিয়েই ছিল আমার লেখালেখির পরিধি। ইন্টারনেট ছাড়া ছাপার অক্ষরে নিজের লেখা বই দেখব – সে চিন্তা কখনোই করিনি। মাস্টার্সে যে থিসিসটা করেছিলাম, সেটা নিয়ে আমার লেখা একটি বই এখনও অবশ্য অ্যামাজনসহ বিভিন্ন অনলাইন কেনাকাটার সাইটে দেখতে পাওয়া যায়। তবে কী না, বিদেশী প্রকাশক বলে বইটি নিজের হাতে এখনও ছুঁয়ে দেখতে পারিনি (কোন একটা অদ্ভুত কারণে লেখক হিসেবে আমার পাওনা সৌজন্য কপিটিও আমি পাইনি!)। আসলে বই লেখার চিন্তা থেকে বইটি লেখা হয়নি – থিসিস লেখার পর সাইড প্রোডাক্ট হিসেবে বইটি তৈরি হয়। তাই বই লেখার যে আনন্দ, তা ঐ বইটি থেকে পাইনি; বরং বইটির সাথে থিসিস লেখার যন্ত্রণাই জড়িয়ে রয়েছে! তবে বই লিখতে না পারার এই অভাবটা বলতে গেলে “প্রায়” পুরোপুরি মিটে গেছে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির জন্য “তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি” বইটি লিখে। (যারা এখনও জানেননা তাদের জানিয়ে রাখি যে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ২০১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে “তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি” বিষয়টিকে সকল বিভাগের জন্য বাধ্যতামূলক করেছে। ফলে বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষাসহ সকল বিভাগের শিক্ষার্থীদেরই বিষয়টি পড়তে হবে। )


বই লেখার আদ্যোপান্ত

“তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি” বিষয়টির প্রতি সবসয়মই অন্য এক ধরণের আকর্ষণ অনুভব করি। তাই গত বছর যখন জানলাম যে “তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি” বিষয়টি প্রথমবারের মত ইন্টারমেডিয়েটে চালু করা হচ্ছে, তখনই এই বিষয়ের উপর নতুন বের হওয়া বই সম্পর্কে খোঁজ নিতে যাই। খোঁজ নিতে গিয়ে তো আক্কেলগুড়ুম! শুনলাম এই বিষয়ের উপর কমসেকম বিশখানা বই বেরিয়ে গেছে! এত বই তো আর পড়া সম্ভব নয়। তাই “বাজার-কাটতি” কয়েকটি বই যোগাড় করে পড়া শুরু করি। যে পরিমাণ উৎসাহ নিয়ে বইগুলো পড়া শুরু করেছিলাম, বই পড়তে গিয়ে তার চেয়েও বেশি পরিমান ভাটা পড়ল সেই উৎসাহে। বইগুলোতে সবকিছু কেমন যেন অস্পষ্টভাবে লেখা। প্রায় সব বইতেই সহজ-সরল বিষয়গুলোকে এত জটিল ও কঠিনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যে, অনেক ক্ষেত্রে নিজেই বিভ্রান্ত হয়ে গেছি! কোন একটি অদ্ভুত কারণে আমাদের দেশের কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য রচিত বইগুলো ঠিক “পাঠ্যপুস্তক” ধরণের হয়না, হয় অনেকটা “সহায়ক বই”য়ের মত। পাশের দেশ ভারতে বিভিন্ন বিষয়ের উপর এরকম প্রচুর সহায়ক বই পাওয়া যায়। আমার মনে হয় যে, আমাদের দেশের কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলায় লেখা বেশির ভাগ বই ভারতীয় সেসব সহায়ক বই অনুকরণ কিংবা অনুসরণ করেই লেখা হয়। যে কারণে সে অর্থে মানসম্মত বই খুব একটা দেখতে পাওয়া যায়না। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সিলেবাসটি এত মানসম্মত অথচ বেশিরভাগ বই সেই মান ধরে রাখতে পারেনি – ব্যাপারটি বেশ দুঃখজনক। আর দুঃখজনক ব্যাপার বলে নিজের মাঝেও একরকম দুঃখ-দুঃখভাব  তৈরি হল।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বইটির প্রচ্ছদ ডিজাইন করেছে বুয়েট পড়ুয়া ছোট বোন আমার নুযহাত ফারাহ। পুরো প্রচ্ছদটি ইঙ্কস্কেপে ডিজাইন করা কিন্তু!

Continue reading তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি – নিজেই যখন লেখক!