বুন্টু ব্যাটেলিয়ন!

ধরে নিচ্ছি আপনি লিনাক্স এবং উবুন্টুর মধ্যে কী সম্পর্ক আছে সেটা জানেন। না জানলেও সমস্যা নেই, এখান থেকে দেখে নিন। যেহেতু আপনি উবুন্টু’র নাম শুনেছেন, সেহেতু ধরে নেয়া যায় যে আপনি কুবুন্টু, জুবুন্টু, লুবুন্টু এইসবের নামও শুনেছেন। এবং সেই সাথে চার-চারটা বুন্টু’র নাম শুনে নিশ্চয়ই মাথায় ব্যাড়াছ্যাড়া লেগে গিয়েছে। নিশ্চয়ই মাথার মধ্যে গাদাগাদি করে বহু প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে! “বুন্টু”র আগে “হ্রস্ব-উ” ঠিক আছে, কিন্তু “বুন্টু”র আগে “কু”, “জু”, “লু” – এইসব লাগানোর শানে নুযুল কি? বিশাল এই বুন্টু ব্যাটেলিয়ন কি কাজে আসে? এত্তোগুলো বুন্টুর মধ্যে সম্পর্কই বা কি? আসুন তাহলে শুরু করা যাক।

উবুন্টু, কুবুন্টু, জুবুন্টু, লুবুন্টু- প্রথমেই এ চারটা শব্দের সাথে পরিচিত হয়ে নিন (যদি আগে শুনে না থাকেন)। কুবুন্টু, জুবুন্টু, লুবুন্টু হচ্ছে উবুন্টু’র বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট বা রূপভেদ। এরা সবাই আদতে উবুন্টুই কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন রূপ। এদের সবগুলোকেই ক্যানোনিকাল তৈরি করে। এদের সবগুলোই একই সাথে রিলিজ হয়। এদের মধ্যে পার্থক্য কেবল এদের ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্ট (Desktop Environment বা DE)। সোজা করে বললে, ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্ট বা ডিই হচ্ছে ইউজার ইন্টারফেস। অর্থাৎ যে ইন্টারফেস ব্যবহার করে একজন মানুষ কম্পিউটার ব্যবহার করে। অনেক ধরনের ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্ট আছে; যেমন: গ্নোম, কেডিই, এক্সএফসিই, এলএক্সডিই ইত্যাদি। সহজভাষায় লিনাক্সবেজড অপারেটিং সিস্টেমে কম্পিউটার চালু করলে ইউজারনেম-পাসওয়ার্ড দেয়ার পর গ্রাফিক্যাল ইন্টারফেসের যে ডেস্কটপ দেখেন সেটাই হচ্ছে ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্ট বা ডিই। ডিইকে অনেকটা পোশাকের সাথে তুলনা করা যায়। উবুন্টু’র ডিই (বা পোশাক) হচ্ছে গ্নোম, কুবুন্টুর হচ্ছে কেডিই, জুবুন্টুর হচ্ছে এক্সএফসিই, লুবুন্টুর হচ্ছে এলএক্সডিই। একই মানুষ বিভিন্ন পোশাক পড়ে যেমন বিভিন্ন রূপে হাজির হতে পারে, ঠিক সেভাবে উবুন্টুর উপর বিভিন্ন পোশাক চাপিয়ে তার চেহারায়ও পরিবর্তন আনা হয়। এজন্য দেখবেন উবুন্টু, কুবুন্টু, জুবুন্টু, লুবুন্টু’র চেহারায় অনেক তফাৎ।

আরেকটু সহজ করে বলি। ধরুন আজকে ‘আপনি‘ শার্ট প্যান্ট পড়ে বাইরে গেলেন, আর গতকালকে বের হয়েছিলেন পাজামা পাঞ্জাবি পড়ে। বলুনতো আজকের আর গতকালকের ‘আপনার‘ মধ্যে পার্থক্য কিসে? কেবল মাত্র পোশাকে তাইনা! কিন্তু পোশাকের ভেতরের মানুষ আপনি যেমন ছিলেন তেমনই কিন্তু আছেন, সেখানে কোন পার্থক্য নেই। উবুন্টু আর কুবুন্টুর পার্থক্যও একই রকম, কেবল বাইরেই ভিন্নতা ভিতরে দুটোই এক। ক্যানোনিকাল কম্পানি যেই ওএস বানায় সেটার মূল ডিস্ট্র’র নাম হচ্ছে উবুন্টু। উবুন্টু ব্যবহার করে “গ্নোম” নামের একটি পোশাক আর কুবুন্টু ব্যবহার করে “কেডিই” নামের আরেকটা পোশাক। সহজভাবে বললে উবুন্টুর উপর “গ্নোম” পোশাকটি না দিয়ে তার উপর “কেডিই” পোশাক পড়িয়ে কুবুন্টু নামের ভার্সনটি বের করা হয়। পোশাক পড়ার পর কুবুন্টু’র চেহারা আর “গ্নোম” পড়া উবুন্টুর চেহারা দেখুন এখানে। এই পোশাকটাকে লিনাক্সে বলা হয় “ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্ট” বা সংক্ষেপে “ডিই”। এরকম আরো দুটি ডিই হল এক্সএফসিই ও এলএক্সডিই। উবুন্টুর যেই ভ্যারিয়েন্টটি এক্সএফসিই পোশাক পড়ে থাকে তাকে বলে জুবুন্টু আর যে ভ্যারিয়েন্টটি এলএক্সডিই’র পোশাক পড়ে তার নাম লুবুন্টু। চারটি ভিন্ন ভিন্ন পোশাক পড়া অবস্থায় (বা ভিন্ন ভিন্ন ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্টের) চারটি ভ্যারিয়েন্টের ডেস্কটপের ছবিগুলো দেখুন নীচে।

উবুন্টুর গ্নোম ডেস্কটপ কুবুন্টুর কেডিই ডেস্কটপ

জুবুন্টুর এক্সএফসিই ডেস্কটপ লুবুন্টুর এলএক্সডিই ডেস্কটপ

একেবারে সহজ করে বললে উপরের আলোচনাগুলো সারসংক্ষেপে অনেকটা নীচের মত দাঁড়ায়:

কেডিই উবুন্টু (Kde UBUNTU) => কুবুন্টু (KUBUNTU)
এক্সএফসিই উবুন্টু (Xfce UBUNTU) => জুবুন্টু (XUBUNTU)
এলএক্সডিই উবুন্টু (Lxde UBUNTU) => লুবুন্টু (LUBUNTU)

এতটুকু পড়ে মনে হতে পারে ডিই বুঝি উইন্ডোজের স্কিনের বা থিমের মত কোন ব্যাপার। আসলে সেটা না। উইন্ডোজের থিম পাল্টালে কিন্তু কেবল চেহারাটাই পাল্টায়, আর কিছু না। কিন্তু লিনাক্স বেজড অপারেটিং সিস্টেমগুলোতে ডিই পাল্টালে চেহারার সাথে আরো অনেক কিছুই পাল্টে যায় (যেমন মেমরি কনজাম্পশন, ডিফল্ট এ্যাপ্লিকেশন ইত্যাদি)। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম, ধরুন আপনি শার্ট পাল্টে পাঞ্জাবি পড়লেন, এতে কিন্তু আপনার কিছু উপযোগিতা বেড়ে/কমে যায়। যেমন শার্টে বুকের কাছে একটা পকেট থাকতো যেখানে আপনি পাঞ্জাবিতে কোমড়ের কাছে দুই পাশে দুটা পকেট পাচ্ছেন। কিংবা আপনি স্যুট পড়লেন, তাহলে আপনার ব্যবহারবিধিও অনেক পাল্টে যাবে। প্রতিটা ক্ষেত্রে আপনি কেবল পোশাক পাল্টাচ্ছেন কিন্তু সেই সাথে আপনার অনেক কিছুও পাল্টে যাচ্ছে। ডিই’র ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটাই ঘটে। যেমন উবুন্টুর (গ্নোমের) ডিফল্ট ফাইল ম্যানেজারের নাম হচ্ছে নটিলাস কিন্তু কুবুন্টুর (কেডিই’র) ডিফল্ট ফাইল ম্যানেজার হচ্ছে ডলফিন। একইভাবে উবুন্টুর (গ্নোমের) ডিফল্ট মিউজিক প্লেয়ার হচ্ছে রিদমবক্স যেখানে কুবুন্টুর (কেডিই’র) ডিফল্ট হচ্ছে এ্যামারক। আবার মেমরি কনজাম্পশনের দিক থেকে সবচেয়ে কম মেমরিতে চলে লুবুন্টু, লুবুন্টুর চেয়ে বেশি মেমরি নেয় জুবুন্টু, তার চেয়ে বেশি দরকার হয় উবুন্টু চালাতে আর সবচেয়ে বেশি মেমরি দরকার হয় কুবুন্টুর জন্য। এভাবে প্রতিটা ডিই’র সাথে ফাইল ম্যানেজার থেকে শুরু করে এদের ডিফল্ট অনেক এ্যাপ্লিকেশন, এ্যাপ্লেটম, ডিসপ্লে টুল ইত্যাদি অনেক কিছু পাল্টে যায়। তাই ডিই পাল্টালে শুধু চেহারাই না বরং কাজের ধরনও খানিকটা পাল্টে যায়। উইন্ডোজের থিমের ক্ষেত্রে কিন্তু অন্য ঘটনা ঘটে। অনেকটা এইরকম: ধরুন আপনি নীল পাঞ্জাবি পড়লেন, সেটা পাল্টে লাল পাঞ্জাবি পড়লেন, কিংবা সাদা পড়লেন, অথবা শর্ট পাঞ্জাবি পড়লেন। প্রতি ক্ষেত্রেই আপনার কেবল পাঞ্জাবীটাই পাল্টে যাচ্ছ, অন্য কোন নতুন পোশাক কিন্তু আসছেনা, ফলে নতুন কোন অপশনও যোগ হচ্ছেনা বা পুরনো কোন অপশনও বাদ পড়ছেনা। পাঞ্জাবি যেমন ছিল তেমনই আছে শুধু পাঞ্জাবিটা পাল্টাচ্ছে। অর্থাৎ আপনি উইন্ডোজে যে থিমই ব্যবহার করুননা কেন (হোক সেটা এক্সপির র‍য়্যাল ব্লু থীম বা উইন্ডোজ ক্লাসিক থীম) আপনার ফাইল ম্যানেজার কিন্তু উইন্ডোজ এক্সপ্লোরারই থাকবে কিংবা ডিফল্ট প্লেয়ার থাকবে উইন্ডোজ মিডিয়া প্লেয়ার। কেবল চেহারাটাই পাল্টাচ্ছে, এখানেই হচ্ছে উইন্ডোজের থিম আর লিনাক্সের ডিই’র মধ্যে পার্থক্য। আর পার্থক্যটা বেশ বিশাল।

আপনি উবুন্টুর যেই ভ্যারিয়েন্টই ব্যবহার করুন না কেন তাতে সব প্রোগ্রামই চালাতে পারবেন। কুবুন্টুর এ্যামারক মিউজিক প্লেয়ার যেমন উবুন্টুতে চালাতে পারবেন ঠিক সেভাবে উবুন্টুর মিউজিক প্লেয়ার রিদমবক্সও কুবুন্টুতে চালাতে পারবেন। এভাবে একটার প্রোগ্রাম আরেকটাতে চালানো সম্ভব- কোন সমস্যা নেই। তাছাড়া হাতেগোনা কয়েকটি কমান্ড ছাড়া উবুন্টুর সব কমান্ডই বাকী সব ভ্যারিয়েন্টে কাজ করবে। লিনাক্সের জগতে এরকম প্রচুর ডিই পাবেন। এসব ডিই’র প্রত্যেকের রয়েছে আবার নিজেদের ফ্যান (ইহা পাংখা নহে, ইহা ভক্ত)। তাই কোনোটাকে এককভাবে প্রাধান্য দেয়া ঠিক হবেনা। তবে এদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে গ্নোম ও কেডিই। সিমপ্লিসিটি ও ব্যবহারবান্ধবতার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে গ্নোম। আবার প্রচুর অপশন ও রূপলাবণ্যের জন্য কেডিই’র রয়েছে বেশ নাম ডাক।

মোদ্দা কথা হচ্ছে- উবুন্টু, কুবুন্টু, জুবুন্টু, লুবুন্টু- আপনি যা-ই ব্যবহার করেননা কেন আসলে আপনি উবুন্টুই ব্যবহার করছেন। এজন্য যখন নতুন ভার্সনের উবুন্টু রিলিজ হয় তখন একই সাথে একই ভার্সনের অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টগুলোও রিলিজ হয়। অর্থাৎ উবুন্টু ১০.১০ রিলিজ পেলে চোখ বন্ধ করে ধরে নিতে পারেন যে কুবুন্টু ১০.১০, জুবুন্টু ১০.১০ এবং লুবুন্টু ১০.১০ ও একই সাথে একই তারিখে রিলিজ পাবে। এদের নাম গুলোও একই থাকে, অর্থাৎ উবুন্টু ১০.১০ এর নাম যেহেতু ম্যাভরিক মির্ক্যাট; সেহেতু কুবুন্টু ১০.১০, জুবুন্টু ১০.১০ ও লুবুন্টু ১০.১০- সবগুলোর নামই হবে ম্যাভরিক মির্ক্যাট। বলার সুবিধার জন্য অনেকে এভাবে বলে থাকেন যে কুবুন্টু ম্যাভরিক মির্ক্যাট, জুবুন্টু ম্যাভরিক মির্ক্যাট ও লুবুন্টু ম্যাভরিক মির্ক্যাট। তাই ব্যবহারের আগে আপনার প্রয়োজন চিন্তা করে ব্যবহার করুন যে, কোনটি আপনার জন্য বেশি যুৎসই হবে। আর যদি নিজের প্রয়োজন না বুঝেন তাহলেও সমস্যা নেই, ১গিগাবাইট বা তার চেয়ে বেশি মেমরি (RAM) হলে উবুন্টু বা কুবুন্টু চালান আর ৫১২ মেগাবাইটের কম হলে জুবুন্টু বা লুবুন্টু চালান। তবে ৫১২ মেগাবাইটেও অনেকে উবুন্টু ও কুবুন্টু চালিয়েছেন। তবে চালাবার আগে দয়া করে এদের সাইট থেকে এদের চালানোর জন্য পিসির মিনিমাম রিকোয়্যারমেন্ট দেখে নেবেন। যাই হোক, বুন্টু ব্যাটেলিয়ন আপনার পিসিতে দৌড়ানোর জন্য অপেক্ষা করছে। তাই বুন্টু ব্যাটেলিয়নের কোন সদস্যকে বেছে নেবেন- সেটা পছন্দ করা আপনার পালা।



পরবর্তীতে প্রকাশিতঃ

29 thoughts on “বুন্টু ব্যাটেলিয়ন!”

  1. লেখায় ৫ … 🙂
    হার্ডডিস্ক না থাকায় কয়দিন লুবুন্টু চালিয়েছিলাম , চরম ফার্স্ট একটা ডিস্ট্রো । সবচেয়ে ভালো লাগল যে বিষয়টা তা হল মালটিমিডিয়া সাপোর্ট , mp3 , dvd সবই চলে , কোন কোডেক ইনস্টল করে লাগে না । ফাইনাল রিলিজে এটা থাকলেই হল ।

  2. কুবুন্টুর স্ক্রীনশট দেখে খুব ভালো লাগলো। ছবি দেখে মনে হচ্ছে কুবুন্টু ট্রান্সপারেন্ট ইফেক্ট ডিফল্ট ভাবেই দেয়া থাকে। লুসিড এর ক্ষেত্রে আর উবুন্টু না কুবুন্টুই লাগাব।

    1. কুবুন্টুর এই ট্রান্সপারেন্সির ব্যাপারটা বেশ পুরোনো। দেখতে শুনতে বুন্টুব্যাটেলিয়নের মধ্যে সবচয়ে সুশ্রী হচ্ছে কুবুন্টু। তবে কোন এক আজব কারণে আমি নিজে উবুন্টুর ফ্যান।

  3. উবুন্টু দেখতে কুৎসিত। মোটেও ব্যবহারবান্ধব নয়। উইন্ডোজ ৭ দেখতে চমৎকার। সার্চ ফিচারটা অসাধারণ। উইন্ডোজ ৭ + অফিস ২০১০-র উপরে জিনিস নাই।

    1. ভাই সাহেবের পুরা নাম কি? নামের শেষের অংশ কি Gates? 😀

      উবুন্টু দেখতে কুৎসিত।

      কী জানি! উপরের ছবিগুলো দেখে তো “কুৎসিত” শব্দটার সার্থকতা খুঁজে পেলামনা…

      মোটেও ব্যবহারবান্ধব নয়।

      উইন্ডোজ সেভেন বড়জোড় ১৫ মিনিটের মত একজনের পিসিতে চালিয়েছিলাম, কাজের জিনিস কোনটাই জায়গা মত খুঁজে পাচ্ছিলামনা… তাই এখন আমি যদি বলি যে উইন্ডোজ ব্যবহারবান্ধব নয় তাহলে কেমন হবে? আসলে হচ্ছে অভ্যাসের ব্যাপার… আপনি উইন্ডোজে অভ্যস্ত তাই উবুন্টু আপনার কাছে কিছুটা অন্যরকম লাগতেই পারে, এটা কিন্তু ব্যবহারবান্ধবতার মাঝে পড়েনা।

      উইন্ডোজ ৭ দেখতে চমৎকার।

      হতে পারে, কিন্তু সেভেনের এই চমৎকার জিনিগুলো আগে থেকেই কুবুন্টুতে দেখে এসেছি, তাছাড়া উবুন্টুর কম্পিজের কাছে উইন্ডোজ এখনো দুধের শিশু! আর ম্যাকের কথাই বা বাদ যাবে কেন?

      উইন্ডোজ ৭ + অফিস ২০১০-র উপরে জিনিস নাই।

      কী বলব বুঝতে পারছিনা… আপনি নিশ্চয়ই এগুলোর বাইরে অন্য কিছু ব্যবহার করেননি! ব্যবহার করলে বুঝতেন!

      আপনার কথাগুলো শুনে মনে হচ্ছে যে- প্রথমতঃ আপনি উবুন্টু ব্যবহার না করেই এর সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, দ্বিতীয়তঃ অকারণে উবুন্টু-বিরোধী কথা বলতেই কমেন্টটি করেছেন। কোন জিনিস ব্যবহার না করে সে সম্পর্কে মন্তব্য করাটা কেমন হল? এতে কি কিছুটা মূর্খতার পরিচয় পাওয়া যায় না? আর উবুন্টুর বিরুদ্ধে কথা বলেই বা আপনার লাভ কি? দেশের মানুষ যদি চুরি করা উইন্ডোজ ব্যবহার না করে উবুন্টু ব্যবহার করে তাহলে তো দেশেরই সুনাম বারে, তাইনা!

      1. আরে ভাই, আপনি মনে হয় রাগ করলেন। রাগ করার কিছু নাই। আমি শুধু আমার ব্যক্তিগত মতামত শেয়ার করলাম। আপনি যেমন আপনারটা করছেন এই ব্লগে। আপনার কাছে যেমন উবুন্টু ভাল লাগে, আমার কাছেও সেরকম উইন্ডোজ ৭ ভাল লাগে। না, আমি উবুন্টু ব্যবহার না করে বলছি না। বেশ কয়েক মাস উবুন্টু ট্রাই করেই বলছি। খোলা মন নিয়েই ব্যবহার করেছি, কিন্তু উইন্ডোজ ৭-এর তুলনায় ভাল লাগল না। কম্পিজ ইফেক্টগুলো উইন্ডোজ ৭-তুলনায় খুব সাদামাটা আর সস্তা মেকআপের মত মনে হয়েছে। ওপেনঅফিস ব্যবহার করতে গিয়ে অনুভব করেছি অফিস ২০১০-এর চমৎকার ইন্টারফেসের অভাব। ভিজুয়াল স্টুডিওর মতো সহজ কিন্তু শক্তিশালী আইডিই না পেয়ে হতাশ হয়েছি।

        আসল কথা হল, আপনার কিছু লেখা পড়ে মনে হয়েছে, উবুন্টু সবচেয়ে ভালো ওএস–এটা একটা চিরন্তন সত্য। কিন্তু আসলে ব্যাপারটা ব্যক্তিবিশেষে ডিফার করে–সেটা বুঝানোর জন্যই আমি কমেন্টটা করেছিলাম। যদি সেটা আপনার কাছে আক্রমণাত্মক মনে হয় তবে দুঃখিত।

        1. আরে ভাই, আপনি মনে হয় রাগ করলেন। রাগ করার কিছু নাই। আমি শুধু আমার ব্যক্তিগত মতামত শেয়ার করলাম। আপনি যেমন আপনারটা করছেন এই ব্লগে। আপনার কাছে যেমন উবুন্টু ভাল লাগে, আমার কাছেও সেরকম উইন্ডোজ ৭ ভাল লাগে।

          কিছুটা মেজাজ খারাপ হয়েছিল বটে, কারন এই পোস্টটা যে সম্পর্কে স্বাভাবিকভাবেই আশা করব যে কমেন্টগুলো সে সম্পর্কেই হবে। তবুও না হলে সমস্যা নাই। কিন্তু আপনি দুম করে এসে উবুন্টুকে “কুৎসিত” বলে গালি দিয়ে উইন্ডোজ সেভেন আর এমএস অফিসের এ্যাড দিয়ে গেলেন- এটাও তো সহ্য করা কঠিন.. তাইনা!

          না, আমি উবুন্টু ব্যবহার না করে বলছি না। বেশ কয়েক মাস উবুন্টু ট্রাই করেই বলছি। খোলা মন নিয়েই ব্যবহার করেছি, কিন্তু উইন্ডোজ ৭-এর তুলনায় ভাল লাগল না। কম্পিজ ইফেক্টগুলো উইন্ডোজ ৭-তুলনায় খুব সাদামাটা আর সস্তা মেকআপের মত মনে হয়েছে। ওপেনঅফিস ব্যবহার করতে গিয়ে অনুভব করেছি অফিস ২০১০-এর চমৎকার ইন্টারফেসের অভাব। ভিজুয়াল স্টুডিওর মতো সহজ কিন্তু শক্তিশালী আইডিই না পেয়ে হতাশ হয়েছি।

          আপনি কতটুকু ব্যবহার করেছেন বা আদৌ করেছেন কিনা সে প্রসংগে আর যাচ্ছিনা (আমার এখনো মনে হয় যে আপনি বড়জোড় টেস্ট করেছেন, কোন কিছু টেস্ট করা আর সেটা দিয়ে কাজ করার মধ্যে অনেক ফাড়াক)। কম্পিজের কাছে উইন্ডোজ এখনো দুধের শিশু। ওপেন অফিস আমার কাছে অনেক বেশি ব্যবহার বান্ধব মনে হয় (কারণ ব্যক্তিগতভাবে রিবন ইন্টারফেস আমার পছন্দ না, যার জন্য এমএসঅফিস ২০০৩ কেই প্রেফার করি)। যেখানে প্রায় সব ল্যাংগুয়েজ সাপোর্ট করা নেটবিন্স রয়ে গেছে সেখানে হাতেগোনা কয়েকটা ল্যাংগুয়েজ সাপোর্ট করা ভিজ্যুয়াল স্টুডিও কিভাবে শক্তিশালী আইডিই হয় বুঝলামনা! তবে তর্কে যাচ্ছিনা, এটা আপনার ব্যক্তিগত পছন্দের ও ইজ্যাবিলিটির ব্যাপার।

          আসল কথা হল, আপনার কিছু লেখা পড়ে মনে হয়েছে, উবুন্টু সবচেয়ে ভালো ওএস–এটা একটা চিরন্তন সত্য।

          আমি তো কোথাও দাবী করিনি যে সবধরনের মানুষের জন্য সকল কাজ করতে উবুন্টুই সবচেয়ে ভালো ওএস এবং এটাই চিরন্তন সত্য! এটা যদি আপনার মনে হয়ে থাকে তাহলে সেটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। পারফেক্ট ওএস এখনো তৈরি হয়নি। তাই এই দাবী করার প্রশ্নই উঠেনা।

          কিন্তু আসলে ব্যাপারটা ব্যক্তিবিশেষে ডিফার করে–সেটা বুঝানোর জন্যই আমি কমেন্টটা করেছিলাম।

          আমি যে এ ব্যাপারটা বুঝিনা সেটা আপনি কিভাবে বুঝলেন ভাই? এই ব্লগের কোথাও কি লেখা আছে যে ওএসের ব্যাপারটা ব্যক্তিবিশেষে ডিফার করেনা? আর আমি যে কেবলমাত্র উবুন্টুই ব্যবহার করি- ম্যাক, ফেডোরা, স্যুযে, মিন্ট ব্যবহার করিনা- সেটাই বা আপনাকে কে বললো? একাধিক ওএস ব্যবহার করার পেছনেও ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ কাজ করে। যদি উবুন্টুকেই সবচেয়ে ভালো মনে করতাম তাহলে অন্যগুলো ব্যবহার করতামনা।

          যাই হোক… এসব বিষয় নিয়ে কোন বিতর্কে যেতে চাচ্ছিনা, সত্যি বলতে কি আমি আগ্রহও পাচ্ছিনা। আপনাকে একটা অনুরোধ করি। কোনটা ভালো ওএস, কেন ভালো ওএস- এসব নিয়ে যদি বিতর্ক করার একান্তই ইচ্ছা থাকে তবে কোন পাবলিক ফোরাম (আমাদের প্রযুক্তি) বা পাবলিক ব্লগ (সামহোয়ারইন, সচলায়তন) বা নিজের ব্লগে করুন। সেসব জায়গায় লোক সমাগম হয় বেশি, রেসপন্সও অনেক বেশি পাবেন, এবং সেখানে আমার মত নাদানরা নয় বরং অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের পাবেন। আর এই টপিক সংক্রান্ত কোন কিছু নিয়ে আলোচনা করতে চাইলে অর্থাৎ উ-কু-জু-লুবুন্টুর মধ্যকার পার্থক্য নিয়ে কিছু বলতে চাইলে এই থ্রেডেড মন্তব্যটা বাদ দিয়ে নতুন মন্তব্য করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

        2. উইন্ডোসের এরো গ্লাস থিমটা ব্যবহার করে খামাখা প্রসেসরের পাওয়ার নষ্ট করার কোন মানে দেখিনা 😉

          যাইহোক অভ্রনীল ভাইয়া , নতুন থীমটা দেখে আসবেন তো কেমন হল – একটু যদিও ভারী কিন্তু ফ্লেক্সিবল উইডথ আর টপ নেভিগেশন বারের জন্য লাগিয়ে নিলাম 🙂

          1. ভাইয়া দেখে আসবেন নতুন থীমটা 😉 আগেরটা বেশী কালারফুল মনে হচ্ছিল , ভালো লাগছিল না । এখন আবার আরেকটা সাদা লাগালাম 🙂

  4. লুবুন্টু কি এ্যাপল পাওয়ার পিসি(G5) এডিশন আছে? যদি PPC এর জন্য থাকে তাহলে দয়া করে আমাকে ডাউনলোড লিংকটা দেন। 🙂

    1. এখনো পর্যন্ত লুবুন্টু'র পাওয়ার পিসি এডিশান মনে হয় বের হয়নি। তবে সামনের অক্টোবরে বের হতে পারে। আসলে লুবুন্টুর ফাইনাল রিলিজ এইবার বের হবার কথা ছিলনা, সামনের অক্টোবরে হবার কথা ছিল।

  5. zak sesh obdi aaj sokale abar amar ubuntute net sonjog holo. Taro ceye valo kotha apnar ei blog ebare ubuntute khulte parchi. porteo parchi. Dekha zak etukute na aar kono bipotti hoy! tahole baki kaj sohoje egube. apnake beshi bir`kto korte hobe na.

    1. আমি আসলে এটাকে "মুশকিল আসান"এ দেবার মত গুরুত্বপূর্ণ ভাবিনাই। মাঝে মাঝে কয়েকজন জানতে চায় যে বুন্টুগুলোর মধ্যে আসল পার্থক্য কোথায়- তখন এই লিংকটা ধরিয়ে দেই! যাই হোক, আপনার কথায় "মুশকিল আসান"এ দিয়ে দিলাম…

      1. আসলে উবুন্টু/মিন্ট/লিনাক্স সম্পর্কিত হলেই মুশকিল আসান-এ দেয়া যায়। আমার ইচ্ছা সব সোর্স ব্লগ/ফোরাম গুলাতে তো থাকবেই, সাথে ওখানেও থাকবে। এক জায়গায় পেলে সবারই সুবিধা।

  6. অভ্রনীল ভাইয়াকে ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য। আপনার লেখা যতই পড়ছি ততই মুদ্ধ হচ্ছি। মনে হয় আমি উবুন্টুর প্রেমে পড়ে যাচ্ছি। আমি অদক্ষ কম্পিউটার ইউজার। উইন্ডোজ ইন্সটল করতে পারি। আমিকি উবুন্টু সেটআপ করতে পারব? কী ভাবে উবুন্টু সংগ্রহ করতে পারি জানালে উপকৃত হব।

    1. উবুন্টু ইন্সটল করা খুব সহজ। আপনি এখানে দেখুন, আশাকরি আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর পেয়ে যাবেন…

  7. ধন্যবাদ।
    অনেকটুকু পরিষ্কার হলাম, তবে পুরোটা নয়। আপনাকে বিরক্ত করেই না হয় চেষ্টা করবো পুরোটা পরিষ্কার হতে।

  8. can i use ubuntu in laptop?
    … i really like this os…but i am new user…can u give me some more info and way to use that os…can i use matlab 9 on ubuntu os…?

    1. উবুন্টু নিয়ে যেকোন ধরনের প্রশ্নের জন্য লিনাক্স ফোরামে চলে আসুন। আর ম্যাটল্যাবেরও লিনাক্সভার্সন আছে তাই ম্যাটল্যাবকে সহজেই চালানো যায় উবুন্টুতে, আমি নিজেই চালাই!

  9. ভাই, ম্যাটল্যাবের লিনাক্স ভার্সন কোথায় পাব? প্লিজ ডাউনলোড করতে বলবেন না, নেটের যে স্পিড, মনে হয় কচ্ছপ মুখে করে ডাটা নিয়ে আমার কাছে আসে।

  10. Bro apnar post pore first e ubuntu download korlam. then deklam aro version ase. er maje kubuntu choice korlam & again download dilam  😀  install process ki same? r ami jodi windows 7 er sathe duel boot use kori tobe ki kubuntu’r full performance pabo ?

    1. উবুন্টু – কুবুন্টু’র ইন্সটল প্রসেস একই।
      যদি উবি দিয়ে ইন্সটল না করে আলাদা পার্টিশনে কুবুন্টু ইন্সটল করেন তবে কুবুন্টুর সম্পূর্ণ পারফর্ম্যান্সই উপভোগ করতে পারবেন।

Leave a Reply