লাইভ সিডি’র জাদু

উবুন্টুর খুব দারুণ একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে এদেরকে লাইভ সিডি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। নিশ্চয়ই ভাবছেন যে “লাইভ সিডি” আবার কি জিনিস? নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে এটা হচ্ছে “জীবন্ত সিডি”। সাধারণত যেকোন অপারেটিং সিস্টেম (যেমন উইন্ডোজ) কম্পিউটারে ইন্সটল না করে ব্যবহার করে দেখার কোন উপায় নেই। অর্থাৎ আপনি যদি দেখতে চান যে উইন্ডোজ ভিস্তা বা উইন্ডোজ ৭ দেখতে কেমন, তবে সেটা দেখার একমাত্র উপায় হল সেটাকে কম্পিউটারে ইন্সটল করা। কিন্তু লিনাক্স-নির্ভর অপারেটিং সিস্টেমগুলো এর ব্যতিক্রম। আপনি ইচ্ছা করলে আপনার হার্ডডিস্কে ইন্সটল না করেই সিডি থেকে বা ইউএসবি স্টিক থেকে এদেরকে চালাতে পারেন। অর্থাৎ ইন্সটল না করেই দেখে নিতে পারবেন যে অপারেটিং সিস্টেমটি কেমন। শুধু দেখাই না বরং একটা পরিপূর্ণ অপারেটিং সিস্টেমের মত একে ব্যবহারও করতে পারবেন। লেখালেখি, ইন্টারনেট ব্রাউজ, অডিও-ভিডিও চালানো ইত্যাদি সব কাজই করতে পারবেন সিডি থেকে। আর যেহেতু লাইভ মোডে ব্যবহার করতে ইন্সটলেশান করার কোনো দরকার পড়েনা তাই আপনার কম্পিউটারের হার্ডডিস্কের পার্টিশনও অটুট থাকবে, কোনো ধরণের ড্যাটা হারাবার ভয় থাকেনা। অর্থাৎ ইন্সটলেশান ছাড়াই পুরো সিডিটাকে “জীবন্তভাবে” ব্যবহার করতে পারবেন। এজন্যই এর নাম “লাইভ সিডি”।

উবুন্টুর যে সিডিটি আপনি সংগ্রহ করেছেন সেটা লাইভ সিডি হিসেবেই আসে। তাই লাইভ সিডি করার জন্য একে আলাদা আর কিছু করার নেই। উবুন্টু-মিন্টের লাইভ সিডি উপভোগ করতে নীচের ধাপগুলো অনুসরণ করুনঃ

১। প্রথমেই সিডি সংগ্রহ করুন। যদি ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে থাকেন তবে আইসো (.iso) ইমেজটাকে বার্ন করুন কিংবা আপনার মাদারবোর্ড যদি ইউএসবি থেকে বুট করা সাপোর্ট করে তবে ইউএসবি স্টিককে বুটেবল করুন।

২। সিডি কিংবা ইউএসবি থেকে কম্পিউটার বুট করুন।

৩। (এখানে উদাহরণ হিসেবে উবুন্টুর সিডিকেই বেছে নিচ্ছি) বুট করার কিছুক্ষণ পর নীচের মত একটা স্ক্রিনশট পাবেন, সেখান থেকে Try Ubuntu অপশনটিতে ক্লিক করুন।

৪। এবার দেখবেন যে নীচের মত একটা ডেস্কটপ আপনার সামনে হাজির। এটাই হল লাইভ সিডি’র কারিশমা!

উবুন্টুর ডেস্কটপ নিয়ে কোনো ধারণা না থাকলে এখান থেকে দেখে নিন। খেয়াল করলে দেখবেন যে ডেস্কটপে Install Ubuntu নামে একটা আইকন আছে। এটাতে ক্লিক করলে উবুন্টু ইন্সটল হবার ধাপগুলো চালু হবে। এবার এই ডেস্কটপ থেকেই আপনি আরামসে ব্যবহার করুন উবুন্টু।

তবে এখানে একটা ব্যাপার হচ্ছে, লাইভ মোডে কম্পিউটারের র‍্যাম বেশ ভালো পরিমানে ব্যবহৃত হয়। তাই মোটামুটি ১ গিগা’র চেয়ে কম র‍্যামে লাইভ অপারেটিং সিস্টেমের রেসপন্স কিছুটা স্লো মনে হতে পারে। আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে, উবুন্টুর লাইভ সিডি যে অপারেটিং সিস্টেম দেখছেন সেটা কিন্তু সম্পূর্ণ অপারেটিং সিস্টেম নয়। উবুন্টুর সম্পূর্ণ স্বাদ নিতে হলে একে কম্পিউটারে ইন্সটল করতে হবে। অবশ্য কিছু অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে যেগুলোর লাইভ সিডিটাই সম্পূর্ণ অপারেটিং সিস্টেম, যেমন নপিক্স বা স্ল্যাক্স। তাছাড়া উবুন্টুর লাইভ সিডি থেকে আপনার প্রয়োজনীয় সব কাজই করতে পারবেন। সম্পূর্ণ অপারেটিং সিস্টেমটি যদি হয় কোনো সিনেমা তবে লাইভ সিডি হচ্ছে তার ট্রেইলার। তবে কিনা দুই ঘন্টার সিনেমার দুই মিনিটের ট্রেইলার না, বরং বলা যায় দুই ঘন্টার সিনেমার দেড় ঘন্টার ট্রেইলার, যাতে কিনা ক্লাইম্যাক্স ছাড়া সবই আছে! 😀

One thought on “লাইভ সিডি’র জাদু”

  1. উবুন্টু ডেস্কটপ-পরিচিতি নিয়ে এই পেজের লিংকটা পাল্টে দিবেন।
    আমি পড়তে গিয়ে হোচট্ খেয়েছি। আর কেউ যেন হোচট না খায়।

Leave a Reply