হতাশা’র মাঝে এক চিলতে অনুপ্রেরণা

সব বাচ্চাদেরই মনে হয় ছোটবেলার স্বপ্ন থাকে যে তারা লেখাপড়া করে বড় হবে, বড় হলে দেশের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী হবে। তারপর যখন তারা বড় হতে থাকে, তখন তারা বুঝতে পারে যে বড় বড় নেতা-নেত্রী হবার জন্য আসলে লেখাপড়ার কোন দরকারই নেই। যে যত মুর্খ, তার তত বেশি ক্ষমতা, সে তত বড় নেতা। যে যত বড় নেতা, তার তত বেশি সম্পত্তি। এসব নেতারা শেয়ার বাজার কেলেংকারি করলেও তাদের নাম সামনে আসেনা, অন্যের সম্পদ মেরে কেটে জবর দখল করলেও কেউ কিছু বলেনা, দেশটাকে বাপ-দাদার নামে নামকরণ ফেললেও কেউ কিছু আপত্তি করেনা। অন্যের অধিকার বঞ্চিত করাটা এদের পেশা, অন্যকে ধোঁকা দেয়া এদের ধর্ম, মানুষ মেরে ফেলা এদের নেশা। নামের আগে এরা নিজেদের নেতা বললেও, আদতে এরা কুকুর-বিড়ালের চেয়েও নগন্য জীব। নিজের জন্যই এরা বাঁচে – অনেকটা কীট-পতংগের মত।

ব্যাকরণগতভাবে যাদের দেখে আমাদের অনুপ্রাণিত হবার কথা, সত্যিকার জীবনে তাদের দেখে ঘেন্নায় আমাদের নাক কুঁচকে আসে। তাদের বলয়ে চারদিকে গ্রাস করে চরম হতাশা। অথচ এই হতাশার মাঝেই একচিলতে অনুপ্রেরণার আলো হিসেবে নিজেদের ঠিকই বিচ্ছুরিত করল ওরা। ওদের জন্ম দরিদ্র পরিবারে। তাই সকালবেলা নাশতা খেয়ে বই নিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি বললেই চলে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবারকে সহায়তা করতে শ্রমিকের কাজ করতে হয়েছে। ফাঁকে পড়ালেখা চালাতে হয়েছে, তাও নিজের রোজগারে। তার পরও থেমে থাকেনি ওরা। মেধা ও অধ্যবসায় তাদের অনন্য করে তুলেছে। এবার এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছে জিপিএ-৫। স্বপ্ন এখন আলোকিত ভবিষ্যতের।

অর্থাভাবের কাছে মাথা নয়ে পড়েনি ওদের

আমাদের ‘বিজ্ঞ’ নেতানেত্রীদের কাছে খুব জানতে ইচ্ছে করে – আপনাদের অগণিতব্য অবৈধ সম্পদের কিংবা শেয়ার কেলেংকারীর সামান্য একটা অংশ দিয়ে এরকম কতজন দরিদ্র মেধাবীকে নির্ঝঞ্জাটে পড়াশোনার সুযোগ করে দেয়া যায়? অথবা নিজেদের লালসার জন্য আর কতজন দরিদ্র মেধাবীকে অংকুরেই হত্যা করবেন?

One thought on “হতাশা’র মাঝে এক চিলতে অনুপ্রেরণা”

  1.  আসুন সবাই নেতিকতা ও মানবিকতাকে জাগিয়ে তুলি। হতাশার মাঝে আলো জ্বালাই। ধন্যবাদ আদনান ভাইকে।

Leave a Reply to মোঃ আঃ লতিফ খানCancel reply